ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি করোনা মুক্ত দেশ গড়ি
Reporter Name

গোলাম রাব্বানী মান্দা, নওগাঁ: করোনাভাইরাস বর্তমান সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত ও উদ্বেগের বিষয়। এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বাধিক কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার করা। মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সহ অন্যান্য জীবাণু থেকেও পরষ্পরকে রক্ষা করা।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার ভিএমপিআরএমসি প্রকল্প হতে উপকাভোগী ও গণগবেষক দলের সদস্যদের বিভিন্ন রকমের সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। শতভাগ মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই কর্মসূচি গুলো নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে। কর্মসূচিতে পথচারীসহ রাস্তায় চলাচলকারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন গণগবেষক দলের সদস্যরা।

এসময় গণগবেষক দলের সদস্যদের সহযোগিতা করার জন্য তাদের উপদেষ্টা দলের সদস্যগণ নিয়মিত সহযোগিতা করে থাকেন। কর্মসূচিতে ব্রতীর ভিএমপিআরএমসি প্রকল্পের রাওতাড়া গ্রামের উপকারভোগী দলের সভাপতি শ্রী বাটু তিগ্যা উপস্থিত ছিলেন। কানুরা গ্রামের করোনা সচেতনাতা কার্যক্রমে গণগবেষক দলের পাশাপাশি উপদেষ্টা কমিটির ভবেশ খয়া, পুনু উরাও সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

কমলপুর গ্রামের ব্রতী শিশুস্কুলের শিক্ষক সাবানার উদ্যোগে গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চাদের হাত ধোয়া, ধুলাবালি নিয়ে খেলাধুলা হতে বিরত থাকা এবং সব সময় পরিস্কার থাকা সহ গ্রামের সকলকে করোনার হাত থেকে মুক্ত থাকতে বিভিন্ন রকমের পরামশ প্রদান করেন। এই কর্মসূচি থেকে সাধারন মানুষকে বাহিরে গেলে অবশ্যই সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করা; হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু না থাকলেও কনুই দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা; নিয়মিত কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় ধরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করা এবং যত্রতত্র কফ,থুতু ফেলা থেকে বিরত থাকার আহ্বাণ জানানো হয়।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় ব্রতী ভিএমপিআরএমসি প্রকল্প হতে এক দল তরুণ-তরুণীদের নিয়ে গণগবেষক দল গঠন করা হয়েছে। দলের সদস্যরা স্বেচ্ছায় তাদের গ্রাম জীবাণুমুক্ত ও সচেতনতামূলক প্রচারণা করে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে গ্রামের আনাচে কানাচে, রাস্তাঘাট সহ তাদের চলার পাশে বিভিন্ন এলাকা জীবাণুনাশক করার কাজ। পাশাপাশি চলছে জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণামূলক কাজ। আকবরপুর ইউনিয়নের আকবরপুর গ্রামের ব্রতী গণগবেষক দলের গবেষনা সমন্বয়কারী শ্রী শহিদ বলেন, আমরা আমাদের গ্রামকে করোনা মুক্ত করতে এই কাজ গুলো অব্যহত রাখবে।

কিসমত ভগবানপুর গ্রামের গণগবেষক দলের তথ্য সমন্বয়কারী রুবেল উরাও বলেন, যুবসমাজই গ্রামকে এবং দেশকে করোনামুক্ত করার ক্ষেত্রে উদ্দীপনামূলক ভূমিকা রাখতে পারে। একটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল যুবসমাজই পারে করোনামুক্ত প্রতিরোধে কাজ করতে।

কমলপুর গ্রামের ব্রতীর শিশু স্কুলের শিক্ষক সাবানা বলেন, তরুণদের মেধা, শ্রম, দক্ষতাই এনে দিতে পারে সব সাফল্য। আতঙ্ক নয়, করোনাভাইরাস রোধে সচেতন ও সতর্ক হওয়া জরুরী।

আকবরপুর ইউনিয়নে চান্দইল গ্রামের উপকারভোগী দলের ক্যাশিয়ার শ্রীমতি মাধবী বর্মন বলেন, যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করবে মরণঘাতী এই ভাইরাস।

ব্রতী ভিএমপিআরএমসি প্রকল্পের ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর গোলাম রাব্বানী বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। জাতীয় সংকট মোকাবিলায় তরুদণদের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। গুজব ও আতঙ্ক নির্মূলে এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরী করে দেশকে করোনার মতো মরণঘাতী ভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে তরুণরাই রক্ষা করতে পারে। যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকার মধ্যে সচেতনতামূলক কাযক্রম পরিচালনা করে, তাহলেই এর ভয়াবহতা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে আমাদের এই মাতৃভূমি। যেহেতু এ মূহূর্তে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, তাই এই সময়কে কাজে লাগিয়ে তরুণরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক তথ্য প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সমাজের যেই অংশটাকে মানুষ সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করে, সেটা হচ্ছে তরুণ সমাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x