ঢাকা, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
পরীমণিকে গ্রেপ্তারের কারণ জানালেন ঢাবি শিক্ষক
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলার বাদী থেকে মাদকের মামলার আসামি হয়ে গত ৪ আগস্ট গ্রেপ্তার হন চিত্রনায়িকা পরীমণি। তিন দফা রিমান্ডের পর গত ১ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি। ‘প্রতিবাদী’ হওয়ার কারণেই তাকে বারবার রিমান্ডে নিয়ে ‘হেনস্তা’ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট সমাজচিন্তক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ‘পরীমণিকে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার করে হেনস্তা করার কারণ, তিনি প্রতিবাদী। অন্যায়ভাবে তাকে বারবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পরীমণির মতো অপরাধে অভিযুক্তদের বারবার রিমান্ডে নেওয়া উচিত নয়। উচ্চ আদালত হস্তক্ষেপ না করলে তার জামিন হয়তো আরও বিলম্বিত হতো।’

এ সমাজচিন্তক আরও বলেন, ‘বিনোদন ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে হয়তো পরীমণিকে বোট ক্লাবে যেতে হয়েছে। তার ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত। বাংলাদেশ তালেবানি রাষ্ট্র নয় যে, পরীমণিদের নিগৃহীত হতে হবে।’

সমাজে নারীরা এখনও ‘নিরাপত্তাহীন’ মন্তব্য করে এই ইমেরিটাস অধ্যাপক বলেন, ‘আমাদের সমাজে নারীরা নিরাপত্তাহীন। পুরুষতান্ত্রিকতা ও অর্থের কাছে আত্মসমর্পণ একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা নারীকে পণ্যে পরিণত করে। এ দেশেও তাই হচ্ছে। সমাজে সৃজনশীলতা ক্রমশ মূল্যহীন হয়ে যাচ্ছে। সামাজিক পরিবর্তন ছাড়া এ অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।’

শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) এফডিসিতে ‘বিনোদন জগতে মাদকের অপব্যবহার বাড়ার কারণ’ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘আটক বা গ্রেপ্তারের পর কাউকে অভিযুক্ত করে রাতের রাণী বা বিভিন্ন আপত্তিকর উপাধি দেওয়া মোটেই সঠিক নয়। বিচারের আগেই রায়ের মতো স্টেটমেন্ট দিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করে কারও সম্মানহানি করা উচিত নয়, যা ঘটেছে চিত্রনায়িকা পরীমণির ক্ষেত্রে। অথচ বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, কারো প্রতি নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড বা এরূপ কোনো আচরণ করা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরীমণির বাসায় মদ বা মাদক পাওয়ার অভিযোগ যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে কীভাবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সেগুলো তার বাসায় গেলো? কারা এর পৃষ্ঠপোষক? কাদের কারণে পরীমণির আজ এ অবস্থা? পিয়াসার বা মৌদের উত্থানের পেছনেই বা কোন রাতের রাজারা বেনিফিশিয়ারি? সেই প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের মুখোমুখি করা হলে প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়বে।’

সাহস এবং প্রতিবাদের ভাষা বিস্ময়কর। এর চেয়ে মধুর প্রতিশোধ আর হয় না। কারাগার থেকে জামিনে মুক্তির পর পরীর পরনে ছিলো সাদা টি-শার্ট এবং মাথায় সাদা পাগড়ির মতো করে জড়ানো একটি কাপড়। জামিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কারাগার থেকে বেরিয়ে একটি ছাদ খোলা গাড়িতে উঠে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন তিনি। পরী তার হাতের তালুতে মেহেদির রঙে লিখেছিলেন- ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’। লেখাটির নিচে তিনি এঁকেছিলেন হাতের মধ্যাঙ্গুল প্রদর্শনের একটি চিহ্ন। এটি অবশ্যই পরীর প্রতিবাদী বার্তা ছিলো।

3 responses to “পরীমণিকে গ্রেপ্তারের কারণ জানালেন ঢাবি শিক্ষক”

  1. … [Trackback]

    […] Read More on to that Topic: doinikdak.com/news/56250 […]

  2. … [Trackback]

    […] Here you can find 16937 additional Information to that Topic: doinikdak.com/news/56250 […]

  3. … [Trackback]

    […] Find More Info here to that Topic: doinikdak.com/news/56250 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x