ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৯ অপরাহ্ন
বিনামূল্যে ৩৫ কোটি বই দিয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন প্রধানমন্ত্রী
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

বছরের প্রথম দিনেই প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে ৩৫ কোটিরও বেশি বই বিনামূল্যে তুলে দিয়ে অনন্য নজীর সৃষ্টি করেছেন শেখ হাসিনা।

এতো বই ছাপিয়ে বাঁধাই করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল শিক্ষার্থীর হাতে একদিনে তুলে দেয়ার ইতিহাস বিশ্বের কোথাও নেই। ঝরেপড়া রোধ করে শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখার লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পাঠ্যবই পেয়ে আসছে।

দেশের সবচেয়ে মনোরম দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটি হলো শিক্ষার্থীদের নতুন বই হাতে দাঁড়িয়ে থাকা। গেল এক যুগ ধরে বছরের প্রথম দিনেই দেখা মেলে বই হাতে শিক্ষার্থীদের এমন দৃশ্য। এদিন নতুন বই হাতে পেয়ে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে আত্মহারা থাকে শিক্ষার্থীরা।

১৯৮৩ সাল থেকে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় শুরু হয় বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ। ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরের নির্ধারিত কয়েকটি বিষয়ের বই দেয়া হতো শিক্ষার্থীদের। একজন শিক্ষার্থীকে অর্ধেক নতুন আর অর্ধেক পুরনো বই দেয়া হতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে বছর সিদ্ধান্ত নিলেন মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে শতভাগ নতুন বই দেয়ার। শুরু হয় এক বিশাল কর্মযজ্ঞ।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৬৫ কোটি বই আমরা বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এই মহতী উদ্যোগ আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেয়া এ উদ্যোগটির পেছনে উদ্দেশ্য ছিল সব স্তরের শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানো। এক যুগ পরে এসে পরিসংখ্যান বলছে দুটি উদ্দেশ্যই সফল হয়েছে।

রমনা থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘এতে সবচেয়ে বড় যে সফলতাটি আসচে তা হলো, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা এখন আনন্দের সাথে পড়তে আসে। তাদের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে অনেক।’

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্যও তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ব্রেইল বই, ডিজিটাল পাঠ্যবই। এমনকি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য দেয়া হচ্ছে তাদের নিজস্ব ভাষার বই।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির ব্যাপ্তি বেড়েছে, সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে। বাজেটের আকার বেড়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যখন এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন তখন এই সিদ্ধান্ত নেয়ার রাজনৈতিক সাহস আর কারও ছিলনা। তার পক্ষেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব।’

পাঠ্যবই বিতরণের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ফলে হ্রাস পেয়েছে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের লিঙ্গ বৈষম্যও।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x