জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের উপজেলায় আগানগর এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে ২৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে। ফলন ও কাঙ্খিত দাম পেয়ে চাষীরা খুশি খুশি হলেও বাজার দর ভালো না পেয়ে লোকশান গুনতে হচ্ছে ব্যাপারীদের। এখানকার উৎপাদিত আলু ব্যাপারীদের হাত ধরে যাচ্ছে রাধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় জমি কিনে বিপাকে পড়েছে ব্যাপারীরা। অন্যান্য বছর বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ মন ফলন হলেও এ বছর বৃষ্টির অভাবে তা নেমে এসেছে ৪০ থেকে ৫০ মন দরে। যে কারণে জমি কিনে লোকশান গুনতে হচ্ছে ব্যাপারীদের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে। ভৈরবের বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ জুড়ে দেখা যায় নারী পুরুষ ও শিশুরা মেতে উঠেছে মিষ্টি আলু তোলার কাজে। এবার ফলনও ভালো হয়েছে। দাম ভাল পাওয়ায় দিন দিন মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেœ কৃষকরা। অপরদিকে বৃষ্টি ও করোনাসহ নানাবিধ কারণে ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকশানের পড়েছেন ব্যাপারীরা। মিষ্টি আলুর চাষ করে অনেকটাই লাভবান হয়েছে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের টুকচাঁনপুর গ্রামের কৃষকরা। কৃষকরা এবার সময় মত মিষ্টি আলুর চাষ করে ফলনও পেয়েছেন ভাল। প্রখর রোদের তেজ উপেক্ষা করে নারী পুরুষ ও শিশুরা আনন্দ উল্লাশ করে খেত থেকে কোদাল দিয়ে মিষ্টি আলু তুলছেন।
তারা এমন ভাবে মাটি কুপিয়ে কুপিয়ে খেত থেকে মিষ্টি আলু যেন আলুতে একটা আচড় ও না লাগে। শ্রমিকরা আলু কুড়িয়ে এক জায়গায় স্তুুপ করে রাখছেন। আর ব্যাপারিরা খেতে বসেই আলু মেপে বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে নিয়ে রাখছেন। মিষ্টি আলুর আবাদ করতে বিঘাপ্রতি খরছ পড়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এক বিঘা জমির মিষ্ট আলু বিক্রয় করা যায় ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায়। কৃষকদের ফলন নিয়ে বাজারে যেতে হয়না। পাইকাররা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায় মিষ্টি আলু। পরে এখান থেকে বিভিন্ন যানবাহনে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হবে।
চাষীরা জানান, এ বছর বৃষি কম হওয়াতে বিগত বছরের তুলনায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে। ব্যাপরীদের কাছে আগাম ফলন বিক্রি করে দেওয়ায় তাদের তেমন একটা লোকশানে পড়তে হয়নি। ব্যাপারীরা বলেন, আগাম ফলন কিনে আমরা এখন লোকশানে পড়েছি। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়াতে ফলন কম হয়েছে। একদিকে ফলন কম অন্যদিকে করোনাসহ নানাবিধ কারণে ক্রয়কৃত ফলন বেচা বিক্রি তেমন একটা হচ্ছেনা। এ বছর আমাদের বড় ধরনের লোকশানে পড়তে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, মিষ্টি আলু একটা লাভ জনক ফসল। এ বছর উপজেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে। আমরা হেক্টর প্রতি ১৫ থেকে ২০ টন আলু পাচ্ছি। আমাদের দেশে মিষ্ট আলুর চাহিদা বেশি । মিষ্টি আলুর ফলন ও দাম পাওয়ায় দিন দিন কৃষকদের মাঝে মিষ্টি আলুর আবাদে আগ্রহ বাড়ছে। আশা করছি আগামীতে এর আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।