২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে ইভ্যালি। শুরুর পর থেকেই গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে দেওয়া হয় একের পর এক আকর্ষণীয় অফার। ইভ্যালির এমন অবিশ্বাস্য অফার নিয়ে শুরুতে ব্যাপক সমালোচনা হয়। সমালোচনা থাকলেও গ্রাহকরা সেই অবিশ্বাস্য অফারে ঝুঁকে পড়ে। তড়িৎ গতিতে বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়ীক কার্যক্রম।
এবার লোক ঠকানোর অভিযোগ আর বিপুল দেনায় ডুবতে বসা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালি এখন পেছনের সারির কর্মীদের বেতন বকেয়া রেখেই ‘বিদায় করতে’ শুরু করেছে। অর্থ সঙ্কটের কথা বলে তাদের ‘ভালো চাকরি খুঁজে নেওয়ার পরামর্শ’ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের কয়েকজন।
সোমবার (২৩ আগস্ট) একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠকে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল জানিয়েছেন, ‘টি-১০ ক্যাম্পেইন’ থেকে প্রাপ্ত তহবিল ছাড়া কোম্পানির কাছে আর কোনো অর্থ নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তিনি কর্মীদের বলেছেন, অক্টোবর-নভেম্বরের আগে কোনো বেতন আশা করবেন না।
এ নির্দেশের বিষয়ে জানতে চাইলে ইভ্যালির প্রধান বিপণন কর্মকর্তা আরিফ আর হোসেন বলেন, তারা শুধু কর্মচারীর সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে কিন্তু এটা জোরপূর্বক নয়। কেউ যদি চলে যেতে চায় তারা যেতে পারে। আমরা সময়মতো বেতন দিতে পারছি না।
প্রতিষ্ঠানটির একজন সাবেক কর্মচারী বলেন, মনে হচ্ছে আমরা চোরাচালান বা অন্য কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলাম। আমাদের ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং এখন চাকরির বাজারে আমাদের সামর্থ্য প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে কারণ প্রায় সবাই কোনো না কোনো সময়ে ইভ্যালির কাছ থেকে কিছু কিনেছে।
আরেকজন সাবেক কর্মচারী বলেন, আমাদের এমন কোনো তথ্য দেওয়া হতো না যা গ্রাহকদের জানতে সাহায্য করবে। আমাদেরকে শুধুমাত্র গ্রাহকদের কাছে ক্রমাগত পুনরাবৃত্তি করতে বলা হয়েছিল যে, তারা তাদের ডেলিভারি বা অর্থ ফেরত পাবেন। এমনকি এটি আসলেই পাবে কিনা তা না জেনেও। এমনকি অনেককে দৈনিক ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে।
ইভ্যালির কাস্টমার সার্ভিস শাখার বেশ কয়েকজন কর্মচারী অভিযোগ করে জানিয়েছেন, তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে মিথ্যা কথা বলতে এবং তথ্য গোপন করতে বলা হয়েছিল।
কর্মচারীরা বলছেন, তারা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ভোক্তা এবং বিক্রেতাদের কাছ থেকে হয়রানি এবং হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন।
ইভ্যালির অনেক কর্মচারীর মতে, শীর্ষ ব্যবস্থাপনা পদগুলোর বেশিরভাগই ইভালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমার পরিবারের সদস্যরা দখল করে আছেন। যাদের অধিকাংশই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে অক্ষম ছিলেন এবং এ সম্পর্কিত কোনো জ্ঞান তাদের ছিল না।
Leave a Reply