ঢাকা, শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
মিরসরাইয়ে ভাঙ্গনে খালে বিলীন সড়ক, দুর্ভোগে ৩ গ্রামের মানুষ
এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই

মিরসরাইয়ে খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ৩ গ্রামের মানুষ। উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বুক চিরে বয়ে গেছে হিঙ্গুলী খাল। আর সেই খালের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হিঙ্গুলী ব্রীজ-ইসলামপুর সড়ক প্রকাশ মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা সড়কটি পূর্ব হিঙ্গুলী, মোহাম্মদপুর, ইসলামপুর গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রবল ¯্রােতের কারণে গত কয়েক বছরে ক্রমাগত ভাঙ্গনের ফলে সড়কটি বিলীন হওয়ার পর এখন খালের পাশের একটি বাড়িও বিলীন হওয়ার পথে। একসময় এই সড়ক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করতো পাশাপাশি ইসলামপুর থেকে এই সড়ক দিয়ে হিঙ্গুলী ব্রীজ হয়ে করেরহাট বাজারে আসা-যাওয়া করতো স্থানীয়রা। বর্তমানে সড়কটি দিয়ে পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে এক সময়ের ব্যস্ততম সড়কটি। ইতিমধ্যে সড়কটি ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষাকল্পে স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ডিও লেটার দেন পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেন শিপন জানান, আমাদের জন্য কি কোন সহযোগিতা নেই, আমরা আর কতকাল ভোগান্তির মধ্যদিয়ে দিন কাটাবো, বেশ কয়েকবছর যাবৎ শুনে আসছি অবহেলিত এই সড়কের কাজ হবে কিন্তু কবে এই সড়কের কাজ হবে সেটা নিয়ে শঙ্কা।
স্থানীয় বাসিন্দা লিংকন জানান, আজ থেকে কয়েক বছর পূর্বে যে সড়ক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করতো সেই সড়ক খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ভাবতে খুবই খারাফ লাগে। তবে বিলীন হওয়ার পর থেকে সড়কটি সংষ্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেও কোন নজরদারী না থাকায় স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নাসির উদ্দীন কোম্পানি বলেন, সড়কটি দিয়ে এখন পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে অসুস্থ্য রোগী ও ভারী কোন জিনিস আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন তিন গ্রামের মানুষ।
স্কুল ছাত্রী ফারিয়া আক্তার বলেন, সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় ভয়ে ভয়ে যেতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ সড়কটি দ্রæত সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা বলেন, সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে অবহিত করলে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে ডিও লেটার দেন। আশা করি শীঘ্রই এই বিষয়ে সুখবর পাবো।
হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন হারুন বলেন, বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পক্ষ থেকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। তবে সড়কের কাজের দায়িত্ব যদি এলজিইডি অথবা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকতো তাহলে আরো অনেক আগে সংস্কার হয়ে যেত। কারণ এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে হওয়ায় একটু সময় লাগছে, আশা করি অচিরেই কাজ হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের সার্কেল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি নিশ্চিত হয়েছি এবং উপ-বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী আনিস হায়দার খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে যাবে এবং আমরা কাজটি দ্রæত সম্পন্ন করতে চেষ্টা করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.