ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
নওগাঁর নিয়ামতপুরে ভাঁঙ্গাচালাঘরে বসবাস “বিধবা শিরিনার”
এম,এ রাজ্জাক নওগাঁ প্রতিনিধি

দারিদ্রতার কষাঘাতে পড়ে বাধ্য হয়ে ভাঁঙ্গাচালাঘরে বসবাস করছেন এক বিধবা । সন্তানের কাজ জুটলে মুখে খাবার ওঠে, না হলে অনাহারে-অর্ধাহারে কাটে হয় দিন।

নওগাঁর নিয়ামতপুর  উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর  গ্রামের বাসিন্দা বিধবা সিরিনা। স্বামী রেজাউল   অসুস্থতা জনিত কারণে প্রায় ১৯ বছর আগে মারা যান। নিজের থাকার ঘরের একদিকে বিছানা আর অন্যদিকে খড় বিছানো গরু থাকার জায়গা। এভাবেই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা পার করছেন তিনি।

দুই ছেলে আর দুই মেয়ে তাঁর। বড় ছেলে  বিয়ে করছে।খাস জমির উপর  ভাঙ্গা কুড়ো বাড়ি। অর্ধেক অংশে বড় ছেলে  পরিবার নিয়ে থাকেন । বিধবা শিরিনা  ঘরের  থাকেন ছোট ছেলে ও বড় মেয়ে। বিধবা শিরিনা

মানুষের বাসায় কিংবা কৃষি কাজ করলেও এখন মৃত স্বামীর শোকে ন্যুজ হয়ে পড়ায় কাজ করতে পারছেন না। তাই সন্তান কিংবা প্রতিবেশিদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। চলাফেরা করতে পারলেও পরিশ্রম করতে পারেন না।

জরাজীর্ণ ঘরে জায়গা সংকুলান না থাকার কারণে গরুর গোয়াল তৈরি করতে পারেননি। ফলে বাধ্য হয়ে নিজ ঘরেই গরুসহ দিন পার করছেন শিরনা।

ছেলের ভাগ্যে কাজ জুটলে মা-ছেলের দু’জনের পেটে ভাত পড়ে নতুবা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন অতিবাহিত করতে হয়। দিন এনে দিন খাওয়া প্রতিবেশিরাও তাদের সামর্থ্যরে মধ্যে সহযোগিতা করলেও সবসময় সেটাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। সরকারি ভাতা বলতে কিছুই পায়নি। এছাড়া আর কোন সরকারি সহযোগিতা পান না বলে জানান তিনি।

কান্না জড়িত কন্ঠে  বিধবা শিরনা (৫০) বলেন, এই মতন কুড়ো ঘরে থাকি। খাওয়া দাওয়া এই মতন। ছেলে দিনমজুরি খাটে, দিন যায় আনে খাই না আনলে না খাই। থাকি ওই মতনে। কেউ যদি একমুট দেয় তাইলে খাই আর না দিলে না খেয়ে থাকি। ছেলেকে বিয়ে দিয়েছি, মেয়ে সাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে সম্পদ বলতে কিছুই নেই।

স্থানীয়  নুরুমোহাম্মদ তার  মা ও ছেলে  কাজ করলে  সংসার চলে না করলে সংসার চলে না। দীর্ঘ দিন থেকে কুঁড়ো ভাঁঙ্গা ঘরে বসবাস। যদি সরকারের পক্ষ থেকে কিছু অনুদান ও বাড়ি করে দেয়, তাহলে স্বপরিবার নিয়ে ভালো ভাবে বসবাস  করতে পারবে।

প্রতিবেশি মতিন জানান, প্রায় ১৯ বছর ধরে এমন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বিধবা শিরিনা । স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তেমনটি খোঁজ খবর রাখে না। কষ্টে দিন পার করছে। ভাঙ্গা চুড়া ঘর থাকলেও নেই কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা।

প্রতিবেশি দুলাল বলেন, বৃষ্টি আসলে বিধবা শিরিনার কষ্ট আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। বাইরে রান্না চুলা ভিজে যায়। রান্না করতে পারে না। বেশির ভাগই সময় না খেয়ে দিন পার করেন মা-ছেলে।

প্রতিবেশি অাজাদ জানান দরিদ্র শ্রেণির মানুষের সুখ সুবিধার জন্য সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা পরও বঞ্চিত হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবার গুলোর একটি বিশেষ অংশ। তাদের দেখার যেন কেউ নেই। সরকারি ভাবে বিধবা শিরিনা একটি থাকার ঘর দিলে শেষ কালেও একটু ভালো থাকতে পারতো।

নিয়ামতপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়াম্যান অাবুল কালাম অাজাদ, দূর্বস্থার কথা স্বীকার করে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়া মারিয়া পেরেরা  জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা সপ্ন বাংলাদেশে পর্নবাসন কেন্দ্র খোলা হয়েছে একটি ও গৃহহীনব্যাক্তি গৃহহীন থাকবে না তারি ধারাবাহিকতায় কাজ করে যাচ্ছি অামরা এবং খোঁজখবর নিয়ে সরকারের সুযোগ-সুবিধা দেবার উদ্যোগ নেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x