ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন
ভৈরবে মাছ ধরার বস্তাফাঁদ তৈরিতে ব্যস্ত কারিগড়রা
Reporter Name

২৮ মে, জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধিঃ বর্ষা মৌশুম শুরু হতেই ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে মাছ ধরার ফাঁদ (বস্তা চাই) তৈরিতে ব্যস্ত এখন কারিগড়রা। এ গ্রামে মাত্র ৮ শতাধিক লোকের বসবাস। বর্ষা মৌশুমে মাছ শিকার আর শুষ্ক মৌশুমে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে এ গ্রামের মানুষ। বর্ষা শুরু হলেই গ্রামের চারিদিকে পানি থৈ থৈ করতে থাকে। হাট বাজার কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্টানে যেতে হলে তখন নৌকাই তাদের এক মাত্র ভরষা। এবারের বর্ষায় নদীনালা আর খালবিলে নতুন পানি এসেছে। মাছ শিকারের জন্য ভৈরবসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন হাট-বাজারে এখন ফাঁদ কেনা-বেচা হচ্ছে দেদারছে। ফাঁদ তৈরি করতে কারিগরদের এখন ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। অন্যান্য ফাঁদের চেয়ে বস্তা চাইয়ের কদর এখন বেশি। একেকটি চাই ১ থেকে দেড় মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। বর্ষায় খাল-বিল আর উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ চলাচলের পথে পেতে রাখা হয় এ ধরনের ফাঁদ। প্রতিটি বস্তা চাই বিক্রি করা যায় ২৫০ থেকে ৩শত টাকা দরে।

মৌশুমের শুরুতেই বাজারগুলোতে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা মাছ ধরার নতুন নতুন ফাঁদ কিনতে আসেন। বেচাবিক্রি ভাল হওয়ায় বাঁশকাটা, শলাকা তৈরি ও ফাঁদ বোনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কারিগড়রা। এ চাই দিয়ে চিংড়ি, বাইল্লা, কৈ, শিং মাগুর ,পুঁটি, খৈলশা, গুচি, ট্যাংরা মাছ শিকার করা যায়। মাছ শিকারের পর নিজেদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি উপার্জনও করা যায়।

মাছ শিকারি সাদ্দাম মিয়া বলেন, মাছ শিকারের পর তা বাজারে বিক্রি করে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দৈনিক উপার্জন করি। আর এ টাকা দিয়ে স্ত্রী সন্তানদের ভরণ পোষন করে থাকি।

মাছ শিকারি সাদেক মিয়া বলেন, আমরা বৈশাখ মাস থেকে নদীতে চাই পাতা শুরু করি। কার্তিক মাস পর্যন্ত নদীতে চাই দিয়ে চিংড়ি,কাটা, বাইল্লামাছসহ দেশি প্রজাতির বিভিন্ন মাছ শিকার করে তা বাজারে বিক্রি করে থাকি। প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার মাছ বিক্রয় করা যায়। মাছ বিক্রি করে প্রতি মৌশুমে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করে থাকি।

কারিগড় হোসেন মিয়া বলেন, আমরা আশূগঞ।জ থেকে বাঁশ, ভৈরব থেকে বস্তা আর কাকরা দিয়ে দৈনিক ৫ টা চাই বানাতে পারি। এসকল চাই নদীতে পাতার পর তাতে কিছু মাছ ধরা পড়ে। এ সকল মাছ আমরা আশুগঞ।জ, ভৈরব বাইশ মোজা, নবীনগরসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আমাদের সংসার চালাই।

কারিগড় জহির মিয়া ,একেকজন কারিগড় দৈনিক ৫ টা চাই বানাতে পারে। একটি চাইয়ের মূল্য ২৫০ টাকা করে। চাইগুলো তৈরির পর ভৈরব সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকি। চাই বিক্রি মৌশুমের কার্তিক মাস নাগাদ শেষ হয়ে যায়। পরে আমরা কৃষি কাজ শুরু করি। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে এই শিল্পকে আরো বড় পরিসরে করা যেত।

x