পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ পাইকগাছায় ঘূণিঝড় যশ মোকাবেলায় এবং জানমাল ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি রোধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০৮টি আশ্রয় কেন্দ্র, পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ, সিপিপি, স্বেচ্ছাসেবক ও স্কাউটস সদস্যদের। ফসল ও ফল-মুলের ক্ষয়ক্ষতি রোধে সতর্ক ব্যবস্থা নিয়েছে কৃষি বিভাগ। মজুদ রাখা হয়েছে, নগদ অর্থ, চাল, শুকনা খাবার, গো-খাদ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও জরুরী যানবাহন। এদিকে ঘূণিঝড় যশ এর প্রভাবে সোমবার দিনভর এলাকায় মেঘলা গুমুট অবস্থা বিরাজ করেছে।
পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূণিঝড় যশ বুধবার দেশের উপক‚লীয় খুলনা এলাকায় আঘাত হানতে পারে এমন আশংকায় ঘূর্ণিঝড় থেকে জানমাল ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি রোধে উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রোববার রাতে এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হয়। তবে সোমবার কোন বৃষ্টিপাত না হলেও দিনভর মেঘলা ও গুমুট অবস্থা বিরাজ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, আমরা প্রশাসন থেকে পৌরসভা সহ ১০টি ইউনিয়নকে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। তবে গড়ইখালী, দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর ও চাঁদখালী সহ কয়েকটি ইউনিয়ন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেগুলোকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই সাধারণ মানুষ যাতে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে আশ্রয় কেন্দ্রে যায় সে জন্য সকল এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।
এছাড়া গ্রাম পুলিশ ও সিপিপি সদস্যরা এ কাজে সংশ্লিষ্ট রয়েছে। ইউএনও খালিদ হোসেন জানান, মানুষ ও গবাদি পশুদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৫৯ হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১০৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সোমবার সকালে বেশ অনেকগুলো আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনও করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগ পূর্ব, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ের জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২ হাজার সিপিপি সদস্য, ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, ৩শ গ্রাম পুলিশ ও আনসার, চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত আছে বিশেষ মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আনা নেওয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষের যানমাল ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থানা পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে ওসি এজাজ শফী জানিয়েছেন। কৃষি ফসল ও ফলমূল রক্ষার জন্য পূর্ব থেকেই বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, দুর্যোগ কালীন সময়ের জন্য নগদ টাকা, চাল, শুকনা খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও মেশিন এবং পর্যাপ্ত গোখাদ্য মজুদ রাখা হয়েছে।