ঢাকা, শনিবার ১০ জুন ২০২৩, ০৪:০১ অপরাহ্ন
দারুল কিরাত – মাহমুদ হাসান চৌধুরী রায়হান (ফুলতলী)
Reporter Name

হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর সবচেয়ে মকবুল খিদমাত হচ্ছে দারুল কিরাত তথা ইলমে কিরাতের খিদমাত। সুদীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর থেকে মানুষকে বিশুদ্ধ কুরআন শিক্ষা দিয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাখো মানুষ দারুল কিরাতের মাধ্যমে সহীহ শুদ্ধ কুরআন শিক্ষা নিয়েছেন এবং এখনো নিচ্ছেন। তাই দারুল কিরাতের বিষয়ে ছাহেবজাদাগণসহ ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর সকল মুরিদান -মুহিব্বীনরা সবসময় আপোষহীন।

আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট-এর অধীন প্রধান কেন্দ্র বা অন্যান্য শাখা কেন্দ্রের কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত এমনিতেই নেওয়া হয়নি। কঠোর লকডাউন, সরকারি বিধি-নিষেধ এর কারণে বাধ্য হয়ে এই দুঃখজনক ও কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দারুল কিরাতের এই ঘোষণায় সবচেয়ে বেশি কস্ট পাচ্ছেন মুরশিদে বরহক হযরত বড় ছাহেব কিবলাহসহ অন্যান্য ছাহেবজাদাগণ। দারুল কিরাত সাময়িক স্থগিতের এই আক্ষেপ তাঁদের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে। দীর্ঘদিন (৩০-৫০ বৎসর) থেকে তাঁরা দারুল কিরাতের খিদমাতের সাথে সম্পৃক্ত। তাঁদের এক একটি দীর্ঘশ্বাস থেকে বুঝা যায় কালামে পাকের খিদমাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার কস্ট। হযরত বড় ছাহেব দারুল কিরাতের খিদমাত জারি হওয়ার জন্য যেভাবে সবসময় দু’আ করেন পাষাণ হৃদয়ও তাতে অশ্রুসিক্ত হয়। দু’আর মধ্যে তাঁর হৃদয়ের আকুতি ও হাহাকার ফুটে উঠে।  আমার ওয়ালিদ মুহতারাম (মাইজম ছাহেব) যিনি রামাদ্বান মাসে সকালের আম মশক থেকে শুরু করে রাত-দিন ছাত্রদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন তিনি এসব নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করে এখন অসুস্থ হয়ে গেছেন। অন্যান্য ছাহেবজাদাদের আক্ষেপ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এছাড়া দারুল কিরাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেই

অধীর হয়ে দারুল কিরাত শুরুর অপেক্ষা করেছেন।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দারুল কিরাতের বেশিরভাগ শাখা কেন্দ্রের নিয়োগ ও অনুমোদনসহ অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রধান কেন্দ্র ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে ছাদিছ জামাতের ছাত্রদের জন্য অনলাইন আবেদন ছাড়াও অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে করোনা মহামারি বেড়ে যাওয়ায় কঠোর লকডাউন ও সরকারি বিধি -নিষেধ আরোপের প্রেক্ষিতে দূর দূরান্তের ছাত্রদের যাতায়াত, আবাসন সংকট (একসাথে অনেক ছাত্রের অবস্থান) ও ক্লাস রুমের স্বল্পতায় ছাত্রদের স্বাস্থ্য ঝুকির কথা বিবেচনায় রেখে এই কঠিন সিদ্ধান্ত ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিতে হয়েছে।

তাই দারুল কিরাতের বিষয়ে অতিরিক্ত আবেগতাড়িত হয়ে বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি, ঘোষণা , ফেইসবুকে দরখাস্ত লিখা, বাণী প্রচার বা আজগুবি তথ্য প্রচার থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিৎ। বরং আমাদের উচিৎ মহান আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে এই দু’আ করা যাতে আল্লাহ পাক এই পৃথিবী থেকে গজব দূর করে রহমত নাযিল করেন এবং মানবজাতিকে এই ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে হেফাযত করেন। আমরা যেন আবারও দারুল কিরাতের মাধ্যমে কালামে পাকের খিদমাতের সুযোগ পাই।

সবার কাছে অনুরোধ দারুল কিরাতের বিষয়ে কিছু প্রচারের আগে একটু চিন্তা-ভাবনা করে সত্য মিথ্যা-যাচাইপূর্বক পোস্ট বা শেয়ার করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x