নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শুক্রবার সকাল ৮ টায় ।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানার আগুন ১৬ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ করছে। টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় ছয়তলা ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক (ঢাকা) দিনমনি শর্মাসহ কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঘটনাস্থলে থাকলেও অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো ধরনের কথা বলছেন না। শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভবনটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় আগুন জ্বলছে। কারখানাটির পঞ্চম তলার একপাশে সেমাই, সেমাই ভাজার তেল, পলিথিন; অপর পাশে কারখানার গুদাম বলে শ্রমিকেরা জানিয়েছেন। কারখানার ষষ্ঠ তলায় কার্টনের গুদাম বলে জানা গেছে।
কারখানার শ্রমিকেরা বলেন, কারখানার চতুর্থ তলায় ললিপপ, তরল চকলেট, তৃতীয় তলায় অরগানিক পানীয় (জুস, লাচ্ছি), দোতলায় টোস্ট বিস্কুট, বিভিন্ন ধরনের পানীয় এবং নিচতলায় বাক্স ও পলিথিন তৈরির কারখানা।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রূপগঞ্জের ভুলতায় জুস কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়েন শ্রমিক স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৩৪)। ঘটনাস্থলেই তাঁরা দুজন মারা যান। এরপর মোরসালিন (২৮) নামের একজন শ্রমিক প্রাণ বাঁচাতে ওই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দেন। মোরসালিনকে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কারখানাটিতে প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করলেও আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনটিতে ১০০০ থেকে ১২০০ শ্রমিক কাজ করতেন বলে মো. আবদুল জলিল ও মো. আবু সামাদ নামের দুজন শ্রমিক জানিয়েছেন। তাঁরা কারখানাটিতে অপারেটর হিসেবে কাজ করেন।
কারখানাটির ভেতরে বিভিন্ন রাসায়নিকসহ দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আবদুল্লা আল আরেফীন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভবনটিতে ফাটল ধরায় আরও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, সারা রাত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার পর ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আগুন কিছুটা কমে আসে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনটির নিচতলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত একটি অংশে প্রবেশ করে কিছু পোড়া লাশ খুঁজে পেয়েছেন। তবে লাশের সংখ্যার বিষয়ে সূত্রটি কিছু বলেনি।
শুক্রবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কারখানা এলাকায় স্বজনদের ভিড় বাড়ছে। তাঁদের আর্তনাদে কারখানা এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার রাতের পর শুক্রবার ভোর থেকে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা কারখানা এলাকায় ভিড় করছেন। সকাল ৯টা পর্যন্ত অন্তত ২৩ জন স্বজন তাঁদের নিখোঁজ স্বজনদের নাম জানিয়েছেন। তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিখোঁজ লোকজনের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।