ঢাকা, সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
শরীয়তপুর-চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ নৌপথে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ডাকাত চক্র
রুহুল আমিন শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা পদ্মা নদীতে ডাকাতি প্রতিরোধে পাহারায় স্থানীয় জনগণের চিত্র।
ভেদরগঞ্জের শরীয়তপুর-চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জগামী নৌপথে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ট্রলারের চালককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (২ জুলাই) সকালে উপজেলার সখিপুর থানাধীন দুর্গম চরাঞ্চল কাঁচিকাটাগামী দুটি যাত্রীবাহী ট্রলারে ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ-সখিপুরগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রলারে ডাকাতি সংঘটিত হয়।
স্থানীয় ভাবে জানা যায়, শরীয়তপুর-চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জগামী বিভিন্ন নৌপথে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ডাকাত চক্র। স্পিডবোটযোগে অস্ত্র সজ্জিত ডাকাত দল প্রতিনিয়ত পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রলারে ডাকাতি করে যাচ্ছে। ডাকাতের কবলে সর্বস্ব হারাচ্ছে শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জের মানুষ। একেকটা ঘটনা ঘটার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুলস্থূল আয়োজন দেখা গেলেও মিলছে না স্থায়ী কোনো সমাধান। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে সর্বসাধারণ।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ও মতলব উত্তরের কালিপুর বাজারে নৌ-পুলিশের ফাঁড়ি থাকলেও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় বরাবরের মতই ব্যর্থ হওয়ায় জনসাধারণের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের সখিপুর থানাধীন দুর্গম চরাঞ্চল কাঁচিকাটাগামী দুটি যাত্রীবাহী ট্রলারে ও শুক্রবার সকালে মুন্সীগঞ্জ-সখিপুরগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রলারে ডাকাতি সংঘটিত হয়। এ সময় যাত্রীদের মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ প্রায় আট লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয় ডাকাতরা।
বছরের বিভিন্ন সময় সংঘটিত এসব ডাকাতি স্থায়ীভাবে বন্ধ না হওয়ায় এসব নৌপথের যাত্রীদের মাঝে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এদিকে পরপর দুদিন ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত প্রতিরোধে নৌ-পুলিশ ও প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।
জানা গেছে, দীর্ঘকাল ধরে পদ্মা-মেঘনা বেষ্টিত শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন দুর্গম চরাঞ্চলের জনগণ যাতায়াতের জন্য নৌপথ ব্যবহারে করে আসছেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর ও বরিশালে যোগাযোগের জন্যও তারা নৌপথ ব্যবহার করেন। এ নৌপথকে কেন্দ্র করে এসব এলাকায় গড়ে উঠেছে ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র। যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার নৌকা ও ট্রলার চলাচল করে।
সখিপুর থানাধীন চরভাগা ইউনিয়নের গৌরাঙ্গবাজার লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখে যায়, ডাকাতির শিকার একটি যাত্রীবাহী নৌকার লোকজন মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছে। নৌকাটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ হয়ে শরীয়তপুরে আসছিলেন। এ ঘটনায় ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহে ট্রলারের চালককে আটক করেছেন স্থানীয়রা। পরে তাকে সখিপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
x