ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন
শরীয়তপুরে মুজিববর্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ে গৃহহীনদের মাঝে ঘর জমি বিতরণ শুরু
রুহুল আমিন,শরীয়তপুর

শরীয়তপুরে মুজিববর্ষে দ্বিতীয় পর্বের ঘর বিতরণ শুরুদৃষ্টি প্রতিবন্ধি মাসুদার হাতে ঘরের দলিলপত্র তুলে দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান

শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কোটাপাড়া গ্রামের শারীরিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মাসুদা বেগম (৪৪) পেল সরকারি জমি ও ঘর। রোববার (২০ জুন) বেলা ১১টায় সদর উপজেলা সভাকক্ষে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম ২য় পর্যায়ের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে প্রতিবন্ধি মাসুদার হাতে ঘরের ফোল্ডার তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম তপাদ্দার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই, সহকারী কমিশনার সাইফুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সামিনা ইয়াসমিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রমূখ।

মাসুদা বেগম জানান, আমি জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধি। তাই আমার বাবা মাটিতে গর্ত করে আমাকে দাঁড় করিয়ে রাখতেন। বাবার বাড়ি শরীয়তপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের স্বর্ণঘোষ গ্রামে। তখন আমার বিয়ের তিন মাস। আমি পান খাব বলে হাতে নেই। স্বামী পান খেতে দেবে না বলে কেঁড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন স্বামীর কনুই লেগে আমার বাম চোখ নষ্ট হয়ে যায়। একদিন বড় মেয়ে রিমা তার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করছিল। আমি ছাড়াতে গিয়ে মেয়ের জামাইর হাতের আঙুল লাগে আমার ডান চোখটা নষ্ট হয়ে যায়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেনি।

মাসুদা আরও জানান, স্বামী বর্তমানে মাটির কাজ করেন। কাজের মজুরিও কম। করোনার কারণে কাজও নেই। নেই এক টুকরা জমি, নেই ঘর। তাই ভাড়া থাকি। ছেলে কাজ করে যা পায় তা দিয়ে ঘর ভাড়া দেই। স্বামী মো. জলিল ছৈয়াল (৫০), মেয়ে রিমা আক্তার (২৬), কুনসুমা আক্তার (২২), নাদিয়া নদী (১২) ও মাসুদ ছৈয়ালকে (১৯) নিয়ে তার সংসার। অতিকষ্টে বড় দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মাসুদা বেগম বলেন, আগে জমি ও ঘর ছিল না। অন্যের বাড়িতে জরাজীর্ণ একটি ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ঘর দিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারে আল্লাহ্ ভালো রাখুক। সন্তানদের নিয়ে ঘরটিতে থাকবো। আমি খুবই খুশি

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই বলেন, জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখি প্রতিবন্ধি মাসুদা ঘর পাওয়ার মত। তাই তাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ঘর দিয়েছি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ৬ উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে সরকারি ভাবে এক হাজার ২০০টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। এর মধ্যে শরীয়তপুর সদরে ১০০টি, নড়িয়া ২৮০টি, জাজিরা ৩০০টি, ডামুড্যা ৮০টি, ভেদরগঞ্জ ২৪০টি ও গোসাইরহাট ২০০টি। বৈরি আবহাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এক হাজার ২০০টি ঘরের কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। তবে এর মধ্যে রোববার ২২২টি ঘরের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়। আধাপাকা প্রত্যেকটি গৃহ নির্মাণে বরাদ্দ ধরা হয়েছে এক লাখ ৯১ হাজার টাকা। ঘরে দুটি শয়ন কক্ষ, একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও একটি বারান্দা। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম পর্যায়ে জেলায় ৬৯৯টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়।

2 responses to “শরীয়তপুরে মুজিববর্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ে গৃহহীনদের মাঝে ঘর জমি বিতরণ শুরু”

  1. … [Trackback]

    […] Read More on on that Topic: doinikdak.com/news/27589 […]

  2. … [Trackback]

    […] Information to that Topic: doinikdak.com/news/27589 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x