ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
 আমতলীতে আয়রণ ব্রীজটি সংস্কারের দাবি, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

ভেঙ্গে যাওয়ার এক বছর অতিবাহিত হলেও বরগুনার আমতলী উপজেলার দুটি ইউনিয়নের সংযোগ সেতু আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন নদীর উপড় আয়রণ ব্রিজটি অদ্যবদি সংস্কার না করায় ব্রিজের উপড় দিয়ে বাঁশের সাকো নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন দু’ইউনিয়নের ১২ থেকে ১২টি গ্রামের মানুষ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে স্থাণীয় প্রকৌশলী বিভাগ গুলিশাখালী ও কুকুয়া ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন নদীতে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ আয়রণ ফুট ব্রিজটি নির্মাণ করেন। গত এক বছর পূর্বে কুকুয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও ওই ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মোঃ ফারুক সরদার একটি ট্রলিতে ইট বোঝাই করে গুলিশাখালী ইউনিয়নের বাজারখালী গ্রামে নিয়ে যাওয়ার সময় আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন ওই আয়রণ ফুট ব্রিজটি পার হতে গিয়ে হঠাৎ ব্রিজটি মাঝ বরাবর ভেঙ্গে ইটসহ ট্রলিটি নদীতে পড়ে যায়। সেই থেকে ব্রিজটি বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া, ফকিরখালী, গোজখালী, বাইনবুনিয়া এবং কুকুয়া ইউনিয়নের সাহেববাড়ী, আজিমপুর, আমড়াগাছিয়া, হরিমৃত্যুঞ্জয়, কুকুয়াহাটসহ ১০ থেকে ১২ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত এক বছর ধরে ওই ব্রিজ দিয়ে বন্ধ রয়েছে রিক্সা, ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, টমটম, মাহেন্দ্রা, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন ছোট বড় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল। এতে ওইসব এলাকার সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশী ভোগান্তিতে পড়েছে ।

অপরদিকে ওই আয়রণ ব্রিজটি পারাপার হয়ে উপজেলা শহর আমতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় খুব সহজে যাতায়াত করা যায়। ব্রিজটি সংস্কার না করায় কোন গুরুত্বর রোগী হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে দ্রæত হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিতেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পার হতে পারছেনা কোন রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের আগুন নিভানোর গাড়ীও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন ওই আয়রণ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষ চলাচল করে। স্থাণীয়রা ব্রিজটির ভাঙ্গা অংশে বাঁশ দিয়ে কোন রকমে পারাপার হলেও গত এক বছরে ব্রিজটি সংস্কার না হওয়ায় স্থাণীয়দের চলাচলে ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌছেছে। বিশেষ করে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের পার হতে বেশী সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থাণীয় ও জনপ্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট স্থাণীয় প্রকৌশলী বিভাগে একাধিকবার দৃৃষ্টি আকর্ষন করেন বলে জানায়। তারপরেও স্থাণীয় প্রকৌশলী বিভাগ ব্রিজটি মেরামতে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাধ্যহয়ে এলাকার ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষ ভেঙ্গে যাওয়া ওই ব্রিজের উপর বাঁশ দিয়ে সাকো নির্মাণ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

স্থানীয় মোঃ জিয়াউল হক ও মোঃ নাসির উদ্দিন (ভিডিপি) বলেন, এই আয়রণ ব্রিজ দিয়ে দু’ইউনিয়নের ১০ থেকে ১২টি গ্রামের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করে। ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার এক বছর পরেও এটি কোন সংস্কার না করায় স্থাণীয় ভূক্তভোগীদের বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। এতে প্রায়ই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিশু, নারী, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষজন। তারা আরো বলেন, সামনে বর্ষা মৌশুম ভেঙ্গে যাওয়া ওই আয়রণ ব্রিজটি অতিদ্রæত সংস্কার বা নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ না করা হলে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম তালুকদার বলেন, ভেঙ্গে পড়া ব্রিজটি দ্রæত মেরামত অথবা নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি।

উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভেঙ্গে যাওয়া ওই আয়রণ ব্রিজটির পরিবর্তে ওখানে একটি গার্ডার ব্রীজ স্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

x