মাদারীপুরের রাজৈরে সালাম শেখ নামের এক ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে রাজৈর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা সরাসরি হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে সংসাদ সম্মেলনে জানান মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। গ্রেফতারকৃতরা হলো, রাজৈর উপজেলার উত্তর হোসেনপুরের ছলেমান খালাসীর ছেলে সরোয়ার খালাসী (৬০), মোস্তফা মুন্সীর ছেলে ছেরজান মুন্সী (৪৫) ও এলাজউদ্দিনের ছেলে রিপন মুন্সী (৪৭)।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার ১লা জুন দুপুরে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এতে জানানো হয়, গত ২৩ মে রোববার রাত ৯টার দিকে ভ্যানচালক সালাম শেখকে চান্দেরবাজার এলাকায় একা পেয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর অবস্থায় সালামকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতের স্বজনরা ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনার পরদিন ৪১ জনকে আসামী করে নিহতের চাচাতো ভাই হেমায়েত শেখ বাদী হয়ে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার সাতদিনের মাথায় গ্রেফতার করা হয় সরোয়ার খালাসী, ছেরজান মুন্সী ও রিপন মুন্সী। এরই মধ্যে সরোয়ার খালাসী ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সংসাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল আরো জানান, ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি জুলফিগার খালাসী ও বাবুল মুন্সী নামে দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় জুলফিগার খালাসীর ভাই শহিদ খালাসী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে ৮৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। সম্প্রতি এই মামলার বেশ কয়েকজন আসামী জামিনে বেড়িয়ে আসে। পরে এই জোড়া খুনের ঘটনা আড়াল করতে ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গত ২৩ মে ভ্যানচালক সালামকে কুপিয়ে হত্যা করে সালামের লোকজন।
প্রসঙ্গত, হোসেনপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা আয়নাল শেখের সাথে একই এলাকার ইউপি সদস্য আতিক মাদবরের সাথে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি নিহত জুলফিগার খালাসী ও বাবুল মুন্সী আতিক মাদবরের সমর্থক এবং ২০২১ সালের ২৩ মে নিহত ভ্যানচালক সালাম আওয়ামী লীগ নেতা আয়নালের চাচাতো ভাই।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।