ঢাকা, শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
সিনেমায় ২২ বছর: মন্দ সময়েও হাল ছাড়েননি
Reporter Name

চলচ্চিত্রে ২২ বছর পূর্ণ করলেন ঢাকাই ছবির শীর্ষ তারকা অভিনেতা শাকিব খান। ১৯৯৯ সালের ২৮ মে মুক্তি পেয়েছিল তার অভিনীত ও সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘অনন্ত ভালোবাসা’।এই ছবির মাধ্যমে রূপালি পর্দায় নামের আগে ‘চিত্রনায়ক’ তকমা লেগেছিল ‘ভাইজান’ খ্যাত শাকিব খানের।

তবে এ নায়কের ক্যারিয়ার শুরুর দিকটা মসৃণ ছিল না। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে নানা ঘাত প্রতিঘাত মোকাবেলা করে আজকের এই শীর্ষ অবস্থান অর্জন করেন এই নায়ক।

রাজ্জাক, কবরী, ববিতা, আলমগীর, শাবানা, ফারুক, ওয়াসিম কিংবা এরকম আরো বহু কিংবদন্তী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের গড়া বাংলা চলচ্চিত্রের ভিত। যাদের দেখে পরবর্তীতে অসংখ্য তরুণ-তরুণী চলচ্চিত্রে এসেছেন। সেসময় মেধাবী পরিচালক-প্রযোজকদের মেলবন্ধনে নির্মিত হয়েছে একের পর এক রুচিশীল সিনেমা! সেই ধারাবাহিকতায় এবং সিনেমার প্রতি প্যাশন থেকেই চলচ্চিত্রে পা রাখেন শাকিব খান। স্ট্রাগল পিরিয়ডে এসেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় তাকে। কারণ সেসময় কিছু অসাধু পরিচালক-প্রযোজক মিলে সিনেমায় অশ্লীলতার চর্চা শুরু করেন। রুচিশীল কাজ করা প্রবীন-নবীন সবাইকেই পড়তে হয় অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে। সেসময় অনেক শিল্পীই চলচ্চিত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। চলচ্চিত্রের নিয়মিত দর্শকরাও হলমুখি হন না, তারাও মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে। তবে দিকভ্রান্ত হননি শাকিব। চলচ্চিত্রে নতুন হলেও তার একটাই ভাবনা ছিলো, বহুদিনের গড়া বাংলা সিনেমার প্রতি দর্শকের আস্থা ফিরিয়ে আনা। সেভাবেই কাজ করে যেতে থাকলেন তিনি।

কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ২০০৫ সালে ‘আমার স্বপ্ন তুমি’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথমবার নজর কাড়েন শাকিব। এরপর ‘কোটি টাকা টাকার কাবিন’ থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাকে হয়নি তাকে। চিত্রনায়ক মান্না বেঁচে থাকাকালীন ২০০৬ সালে শাকিব হয়ে ওঠেন ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম ভরসা! চলচ্চিত্রের বিজ্ঞ জনদের মতে, ২০০৭ থেকে শাকিব দেদারসে এগিয়ে গেছেন।

তখন থেকেই শাকিব খানকে ঘিরে লগ্নী হতে থাকে কোটি কোটি টাকা। এমন বছর গেছে শাকিবের ২০টির মতো চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির খারাপ সময়ে তিনি হিরো দ্য সুপারস্টার, পাসওয়ার্ড, বীরের মতো বড় বাজেটে সিনেমা লগ্নী করে চাঙ্গা করেছেন চলচ্চিত্রাঙ্গন। কাজের সুবাদে পেয়েছেন চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার।

২২ বছর আগে চলচ্চিত্রে পা রাখা সেই শাকিব খান এখনও বাংলা চলচ্চিত্রে আশার বাতিঘর। ক্যারিয়ারের ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ২০১৬ সালের পর শিকারি, নবাব, ভাইজান এলো রে, চালবাজ, নাকাব এই চলচ্চিত্রগুলো দিয়ে শাকিব খান ক্যারিশমা দেখছিলেন ওপার বাংলাতেও। সেখনাকার দর্শকরা ও প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পীদের কাছে শাকিব হয়ে ওঠেন প্রিয়ভাজন।

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা ও শাকিব খানের ভক্তরা তাই তাকে ভালোবেসে বিভিন্ন বিশেষণ যোগ করে ডাকেন কিং খান, ভাইজান কিংবা সুপারস্টার!

ক্যারিয়ারের ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষে শাকিব মনে করেন কঠোর পরিশ্রম ও হাল না ছাড়ার জন্য তার ক্যারিয়ার এতটা দীর্ঘ ও মজবুত হয়েছে। এমন বিশেষ দিনে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাতেও ভুল করেননি ঢালিউড বাদশা।

শাকিব খান তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টের মাধ্যমে লিখেছেন, ‘যখন চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করি তখন আমি অপরিপক্ক কিন্তু দূরদর্শী ছিলাম। জানতাম না কোথায় যাচ্ছি বা কী করব! শুধু এটুকু জানতাম, আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং কোনো সময় হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। আজ যখন পেছনে ফিরে তাকাই, তখন আমি সকল মানুষ এবং অভিজ্ঞতার কাছে কৃতজ্ঞ।’

ধন্যবাদ জানিয়ে শাকিব খান বলেন, আমার প্রথম চলচ্চিত্র ‘অনন্ত ভ্যালোবাসা’র পরিচালক এবং প্রযোজকের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন। এরপর আমার সকল পরিচালক, প্রযোজক, সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিচ্ছি যাদের জন্য আজকের আমি তৈরি হয়েছি।

x