জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি: এহামরী করোনার কারনে সরাদেশে চলছে দ্বিতীয় বারের মত লকডাউন। সেই থেকে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানেন না। এমন পরিস্থিতিতে অনিশ্চিত হয়ে পডছে ট্রেনের উপরে নিভর্র করে জীবিকা নির্বাহ করা হকার এবং ফেরিওয়ালাদের জীবন। ট্রেনের মতোই ভৈরব স্টেশনে খেলনা, বই, পেন, লজেন্স, ফল, মিষ্টি কিংবা রুমাল, বাদাম, চানাচুর, চা-বিস্কুট, বিক্রি করা হকারদের জীবনের চাকাও এখন থেমে রয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ শতাধিক হকার।
গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় দেশের লকডাউন। বন্ধ হয়ে যায় রেল পরিসেবা। ভৈরব স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নানা ধরনের সামগ্রী নিয়ে স্টল রয়েছে হকারদের। সেগুলিও বন্ধ। তার সাথে যুক্ত ৫ শতাধিক হকার , দোকানদার ও ফেরীওয়লা। ট্রেন না চলায় তাদের পরিবাওে নেমে এসেছে অন্ধকার।
হোটেল ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, গত ৫ তারিখ থেকে লক ডাউনের কারনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। পরিবার পরিজনসহ হোটেলের শ্রমিকদের নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছি। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন লক ডাউন আর যেন দীর্ঘায়িত না করে।
হোটেল ব্যবসায়ী আলকাছ মিয়া বলেন, লক ডাউনের কারণে রেল ষ্টেশনে সকল কাজকর্ম বন্ধ হয়েগেছে। হোটেল বন্ধ হয়ে গেলেও হোটেলে ভাড়া ও বাসা ভাড়া বকেয় পড়ছে। এগুলোতো আমাকে পরিশোধ করতে হবে। বড় ধরণের একটা ঋণগ্রস্ত হয়ে গেলাম।
শ্রমজীবি আকতার হাসেন বলেন, আমরা দিন মজুর মানুষ। দেশে লক ডাউনের কারনে সব কিছু বন্ধ থাকায় কোন কাজকর্ম করতে পারছিনা। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিন পার করছি।
ষ্টেশনের কয়েকজন মুজুর বলেন , ২০ -২৫ বছর যাবত এই ষ্টেশনে মানুষের মালামাল ট্রেনে তুলে দিয়ে যে টাকা পাই তা দিয়ে কোন রকমে পরিবারের ভরণ পোষন করে থিাকি। ট্রেন না চলায় এখন আমাদের কোন কাজ নেই। বাড়িতে থাকলে বউ বাচ্চারা টাকার জন্য বিরক্ত করে। তাই ষ্টেশনে বসে সময় কাটাচ্ছি।
হকার বাদশা মিয়া বলেন, এই ষ্টেশনে ৫ শতাধিক হকার প্লাট ফরমে ও ট্রেনে বিভিন্ন পণ্য ফেরি কওে বিক্রি কওে তাদেও জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এদের সাথে জড়িত রয়েছে পরিবারের প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার লোক। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে হকাররা অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
ভৈরব রেলওয়ে হকার শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলাল মিয়া বলেন, কবে ট্রেন চালু হবে কিংবা চালু হলেও পরিস্থিতি আগের মতো থাকবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে সন্ধিহান। লক ডাউনে হকার ফেরিওয়ালাদের কেউ কোন অনুদান দেয়নি এমন কি কেউ কোন খোজ খবরও নেয়নি। সরকার যদি আবারো লক ডাউন বাড়ায় তা হলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।