মাদারীপুরে এসিড পুশ করে স্ত্রী রোজিনা আক্তার (২২) হত্যা মামলায় স্বামী নুর হোসেন খানকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার দুধখালী গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার নুর হোসেন খান একই গ্রামের লিয়াকত হোসেন খানের ছেলে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুই বছর আগে সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের খালাসিকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলাম মুন্সীর মেয়ে রোজিনার ইসলামের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় দুধখালী গ্রামের লিয়াকত হোসেন খানের ছেলে নুর হোসেন খানের। এরপর পরই নুর হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন নগদ অর্থ যৌতুক দাবী করে। এতে দিতে অস্বীকৃতি জানায় রোজিনার পরিবার। পরে শুরু হয় রোজিনার উপর শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ জুলাই রাতে রোজিনাকে মানসিক নির্যাতন শুরু হয় নুর হোসেন। এতে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে রোজিনা। একপর্যায়ে ঘরে থাকা ভ্যাটারিতে ব্যবহৃত এসিড ইনজেকশনের মাধ্যমে রোজিনার শরীরের পুশ করে নুরু হোসেন। এতে আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়ে রোজিনা। পরদিন সকালে মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে রোজিনাকে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে পাঠানো হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা দিন অবস্থায় শনিবার (১৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে মারা যায় রোজিনা। এই ঘটনায় নিহত গৃহবধু রোজিনার বড়ভাই নাসির উদ্দিন মুন্সী বাদী হয়ে সোমবার রাতে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় নুর হোসেন খানকে প্রধান করে ৬জনের নামে মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্ত নুর হোসেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আইনীপ্রক্রিয়া শেষে নুর হোসেনকে পাঠানো হয় আদালতে। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক ফয়সাল আল মামুনের আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় নুর হোসেন খান। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) মো. হাসানুজ্জামান জানান, নিহতের বড়ভাই বাদী হয়ে মামলা দিলে প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া বাকি আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতার নুর হোসেন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
মাদারীপুর জজ কোর্টের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) রমেশ চন্দ্র দাস জানান, নুর হোসেন আদালতে ঘটনার বিষয় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।