রমজান মাসের সম্মান রক্ষা করা প্রত্যেক মুমিনের একান্ত কর্তব্য। আজ রহমতের দশ রমজান প্রায় শেষের দিকে। রোজা হলো তাকওয়ার পরিচায়ক। আল্লাহ নিজেই রোজাদারকে পুরস্কৃত করবেন। এখন বিষয় হলো আমরা কি আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের রোজা রাখতে সক্ষম হয়েছি?
রোজা রাখার ক্ষেত্রে যদি ধরে নেই দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো হলো- অন্তর, পেট, চোখ, নাক, কান, জিহবা।
অন্তরের প্রসঙ্গ যেহেতু প্রথমে এসেছে তাই এক্ষেত্রে নিয়তের কথা না বললেই নয়। হাদিসের সর্বাধিক বিশুদ্ধ গ্রন্থ সহীহ বুখারীর ১নং হাদিসে দোযাহানের বাদশাহ, মানবতার মুক্তির দিশারী নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সকল আমলের মূল ভিত্তি হচ্ছে নিয়ত অর্থাৎ প্রত্যেক আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।
সাধারণভাবে বলতে গেলে অন্তরের রোজা হল- নিজের মনকে গর্ব- অহংকার, হিংসা-বিদ্বেষ ও লোক দেখানো থেকে মুক্ত রাখা এবং গুনাহের কাজের প্রতি কোন আগ্রহ না থাকঅন্তরের রোজা ঠিকমতো রাখার মাধ্যমে মুমিনের অন্তর সূর্যের মত আলো দান করে আর ভোর রাতে তা সুবহে সাদিকের আলোর মত জ্বলতে থাকে। এভাবেই তাঁর অন্তরের রোজার মাধ্যমে তিনি জান্নাত লাভের পথ সুগম করেন।
রমজান আত্মনিয়ন্ত্রন তথা সংযমের মাস। মুমিন হালাল খাবার গ্রহণ ও হারাম বর্জনের মাধ্যমে তাকওয়ার পরিপূর্ণ পরিচয় দিয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে বলেছেন: তোমরা আমার দেয়া হালাল রিজিক খাও এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় কর আর আমারই ইবাদত কর। [আল কুরআন, সূরা বাকারাহ, আয়াত নং ১৭২]
সূরা আল মু’মিনুন এর ৫১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র জিনিস থেকে খাবার গ্রহণ কর এবং নেক কাজ কর।
আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার জন্য হালাল রিজিক শর্ত। এজন্য আমাদেরকে সবসময় ব্যবসা-বাণিজ্যের পণ্যে ভেজাল, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ওজনে কম-বেশি, সুদ-ঘুষের মাধ্যমে উপার্জন, ছিনতাই, চাঁদাবাজির মত নিকৃষ্ট বিষয় থেকে বিরত থেকে রিজিক অন্বেষণ করতে হবে।
চোখ দিয়ে আমরা পৃথিবীতে আল্লাহর অশেষ নেয়ামতরাজি দেখতে পাই। আর এই চোখের রোজা হলো দৃষ্টি অবনত রাখা, মন্দ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত না করা। সর্বোপরি, চোখকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করা। আরশের মালিক, রাজাধিরাজ, সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ পবিত্র কালামে হাকিমে বলেছেন: (হে নবী, আপনি) মুমিন পুরুষদেরকে বলে দেন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে, তাদের লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ করে। এটিই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ সে বিষয়ে পরিপূর্ণ খবর রাখেন। আর মুমিন নারীদেরকেও বলে দেন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ করে।
প্রশ্ন জাগতে পারে কানের আবার রোজা কিসের? হ্যাঁ কানেরও রোজা আছে। আর তা হচ্ছে গান-বাজনা ও অশ্লীল কথা না শোনা অর্থাৎ নিষিদ্ধ বিষয় থেকে কানকে সর্বদা বিরত রাখা।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন: নিশ্চই কান, চোখ, অন্তরকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। [আল কুরআন, সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত নং ৪২]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা ফুরক্বানের ৭২ নং আয়াতে বলেছেন : তারা যখন বেহুদা কথা শোনে তখন তারা তা এড়িয়ে যায়।
জিহবার রোজা হল- অনর্থক কথাবার্তা, অশ্লীল, মন্দ, অপবাদ, অভিশাপ দেয়া থেকে থেকে নিজেকে বিরত রাখা।
আল্লাহ আমাদের উপর্যুক্ত বিষয়ের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। রমজান মাসের রহমত, বরকত, নাজাত আমাদের নসীব করুন। আমীন।
… [Trackback]
[…] Read More Information here on that Topic: doinikdak.com/news/8663 […]
… [Trackback]
[…] Information to that Topic: doinikdak.com/news/8663 […]
… [Trackback]
[…] Find More Information here to that Topic: doinikdak.com/news/8663 […]