ঢাকা, মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
শ্রীপুরে কৃষককে সরকারি চাকুরীজীবি দেখিয়ে আড়াইকোটি টাকা আত্নসাতের চেষ্টা
আরিফ প্রধান :
গাজীপুরের শ্রীপুরে সোনালী ব্যাংকের শ্রীপুর থানা হেডকোয়ার্টার শাখা থেকে এডভাইস জালিয়াতীর মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকা আত্নসাতের চেষ্টা ঘটনার মুল হোতা উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের মাষ্টার রোলের কর্মচারী তানভীর হাসান, হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর আরিফুর রহমান, ঢাকার উত্তর খান জামতলা এলাকার শাহেনা আক্তার এবং কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নওদাবস নিউবড়ভিটা গ্রামের সুবল চন্দ্র মোহন্ত দু’মাস ধরে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
চক্রের মূল হোতা মামলার অভিযুক্ত তানবীর লক্ষিপুর সদর উপজেলার আলীপুর গ্রামের মাহফুজুর রহমানের ছেলে।তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮নং ওয়ার্ডের মধ্য ছায়াবিথী এলাকার অজিত কুমারের ডি/৫৮নং বাড়ির দ্বিতিয় তলায় ভাড়া থেকে শ্রীপুরে চাকুরী করতো। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৭জুন সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর থানা হেডকোয়াটার শাখা থেকে ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯হাজার ৯’শ ৬০ টাকা পাঁচ টি এডভাইস জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
এ ঘটনায় ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ রেজাউল হক বাদী হয়ে ১ জুলাই তারিখে শ্রীপুর থানায় নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রহমান, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর আরিফুর রহমান, মাষ্টাররোলে কর্মরত তানবীর হাসান, নাগেশ্বরী সোনালী ব্যাংক শাখার হিসাবধারী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নওদাবস নিউবড়ভিটা গ্রামের রনজিত কুমার, প্রবাশ চন্দ্র রায়, সুবল চন্দ্র মোহন্ত, কমল চন্দ্র রায়, ফুলমনি রাণী এবং ঢাকার উত্তরখান জামতলা এলাকার শাহেনা আক্তার। মামলার পাঁচ আসামীকে পুলিশ ঘটনার পর পরই গ্রেফতার  করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য গত ১৭ জুন তারিখে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার স্বাক্ষরীত এডভাইসের মাধ্যমে ৫টি বিলের বিপরীতে সরকারী কর্মকর্তাদের আনোতুষিকের টাকা  প্রদানের লক্ষ্যে ২ কোটি ৪৬লাখ ৯হাজার ৯’শ ৬০টাকা পরিশোধ করতে এডভাইসের হার্ড কপি ব্যাংকে জমা দেয় হিসাবরক্ষন অফিসের মাষ্টাররোলে কর্মরত তানবীর হাসান। হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ বজলুর রহমান সোনালী ব্যাংকের শ্রীপুর শাখা ব্যবস্থাপককে এডভাইস গুলোর নিশ্চয়তা প্রদান করেন।
পরে সোনালীব্যাংক লিঃ এর শ্রীপুর থানা হেডকোয়াটার শাখা থেকে এডভাইস অনুযায়ী নাগেশ্বরী সোনালী ব্যাংক শাখার হিসাবধারী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নওদাবস নিউবড়ভিটা গ্রামের রনজিত কুমার, প্রবাশ চন্দ্র রায়, সুবল চন্দ্র মোহন্ত, কমল চন্দ্র রায় ,ফুলমনি রাণী এর হিসাব নম্বরে  টাকা গুলো প্রদান করা হয়। শাহেনা আক্তার ঢাকার সোনালী ব্যাংক উত্তরখান শাখা হতে নাগেশ্বরী শাখার চেকগুলো জমা দিয়ে টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সচেতনতায় জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পরলে দ্রুত নো-পেমেন্টের নির্দেশ দেন। এতে করে জালিয়াত চক্রটি সরকারী টাকা হাতিয়ে নিতে পারেনি।
উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন বলেন আট জুলাই আমি শ্রীপুরে যোগদান করেছি। ঘটনার পরপরই হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রহমান এবং অডিটর আরিফুর রহমানকে সাময়ীক বরখাস্ত করে প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, গ্রেফতার কৃত পাঁচ আসামী আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে আছেন।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, ঘটনার পরপরই পাঁচ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীরা পলাতক রয়েছে। ২৮ আগষ্ট মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) স্থানান্তরীত হয়েছে। পলাতক আসামী গ্রেফতার সহ আইন গত কার্যক্রম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচালিত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x