কোরবানির ঈদে খুব অল্প সংখ্যক মানুষই পারেন মাংসের বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে। ঈদের কয়েকদিনে গরু বা খাসির মাংস বেশি বেশি খেয়ে সারা বছরের ডায়েট ভেস্তে যায়। তাই শুধু ভুরিভোজ করলেই হবে না, ওজন যাতে না বাড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আর ওজন বেড়ে গেলে কিভাবে অতিরিক্ত মেদ ঝরাবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক।
চিবিয়ে খাওয়া অভ্যাস করুন
গরু-খাসির মাংস, বিরিয়ানি, তেহারি- যাই খাবেন না কেনো, ভালো করে খাবার চিবিয়ে খেতে হবে। অনেকের ধারণা খাবার পেটে গেলে তা আপনাআপনি হজম হয়ে যায়। আসলে খাবার মুখে নেওয়ার পর চিবিয়ে খাওয়ার সময় থেকেই তা হজম হওয়া শুরু হয়। মুখের লালাতে এমন এক এনজাইম আছে, যা খাবার গ্রহণ করার পর পর হজম শুরু করে। এজন্য হজম বাড়াতে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার খেতে হবে।
পানি পান করুন
খাওয়ার আগে পানি পান করুন। খাওয়া শুরুর আগে অন্তত ২ কাপ পানি খাওয়া উচিত। এতে ৭৫-৯০ ক্যালরি কম গ্রহণ করা হয়। অনেকে বোরহানি ও কোমলপানীয় পান করে বলে থাকেন পানি পান করতে হবে না। এটা ভুল ধারণা। বাড়ির ছোট-বড় সবাই যেনো পরিমাণমতো পানি পান করে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। এক্ষেত্রে হালকা গরম পানি খেতে পারেন। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও মেদ ঝরাতে সহায়তা করে।
শাকসবজি ও ফল খান
এ সময় যেহেতু মাংস বেশি খাওয়া হয়, সে জন্য খাবার সঙ্গে প্রচুর সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করুন। পানি খাওয়ার পাশপাশি ফলের রস ও দই খেতে পারেন। ফল এবং শাকসবজিতে থাকা ফাইবার শরীরকে আর্দ্র রাখতে ভূমিকা রাখে। পাশপাশি ক্ষুধা কমাতেও সাহায্য করে। যদি কেউ মাশরুম খেতে পছন্দ করেন তাহলে মাশরুম দিয়ে মাংস রান্না করতে পারেন। এতে মাংসের চর্বি কেটে যায়। ঈদে অনেকে বেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে ফেলেন, এটা না করে ফল খেতে পারেন। ফলের মিষ্টতা আপনার মিষ্টি খাওয়ার চাহিদা পূরণ করবে।
ব্যায়াম করুন
ঈদের ছুটিতে খাওয়াদাওয়ার পর সবাই বিছানায় বা সোফায় গা এলিয়ে দেন। এটা ঠিক নয়। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। খাওয়ার পর অন্তত ১৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। এক্ষেত্রে কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বেছে নিতে পারেন। যেহেতু ভারি খাবার খাচ্ছেন তাই ঈদের কয়েকদিন সুযোগ পেলেই হাঁটুন। লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে চলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
বেশি ঘুমাবেন না
ঈদের ছুটিতে অনেকেই রাত জাগেন তারপর দিনে দীর্ঘ সময় ঘুমান। কোনোভাবেই আট ঘণ্টার বেশি ঘুমাবেন না। বিছানা ছাড়া সোফা কিংবা অন্য কোথাও ঘুমাবেন না। ঈদে কাজের ব্যস্ততা কম বলে দেরি করে ঘুমানো ও দেরি করে উঠা- দুইটাই বর্জন করুন। চেষ্টা করুন বছরের বাকি সময়টার মতোই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে। আর ঘুমানোর অন্তত ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার সম্পন্ন করুন। এ সময়ের মধ্যে খাবার হজম হয়ে যায়। এবং রাতে ঘুমানোর আগে নিয়ম করে ১৫ মিনিট স্বাভাবিক গতির চেয়ে দ্রুত হাঁটাহাঁটি করুন।
অবসর সময়ে এক কাপ হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস বা গ্রিন টি পান করতে পারেন। এতে বিপাকক্রিয়া বাড়বে। অবশ্যই চা পান করতে হবে চিনি ছাড়া। আর খাওয়ার পরে অনেকেই ধূমপান করেন কিংবা পান-জর্দা খাওয়ার অভ্যাস আছে। এই অভ্যাসগুলো বাদ দিন। নিয়মিত শরীরচর্চা মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করুন। পাশাপাশি গৃহস্থলি কাজ করলেও শাররিকভাবে সুস্থ থাকবেন।