দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন ও একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের একমাত্র চিকিৎসার আশা ভরসা হচ্ছে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (হাসপাতাল)। সেই গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী সরকারি বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার, অ্যানেসথেসিওলজিষ্ট ডাক্তার, সার্জন ও জনবল সংকট। সেই সঙ্গে এক্সরে মেশিন, আল্ট্র্রাস্নোগ্রাম, ইসিজি, জীবানু নাশক ট্যানেল অকেজো হওয়ায় সব ধরণের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা এলাকার সাধারণ মানুষ ও রোগীরা পড়ছেন চরম দুভোর্গে।
বিরামপুর উপজেলার ৪নং দিওড় ইউনিয়নের বুজরুক বাইলশিরা গ্রামের রোস্তম আলী জানান, আমার গ্রসূতি স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে নরমালী সন্তান প্রসাব সম্ভাব না হওয়ায় পার্শ্ববতী ক্লিনিকে সিজার করতে হলো। আমরা গরীব মানুষ ক্লিনিকে প্রচুর টাকা খরচ হলো। এই সরকারি হাসপাতালে যদি সিজারের ব্যবস্থা থাকতো। তাহলে আমার অনেক উপকার হতো।
উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়নের দাউদপুর কাজীপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিন রুমী জানান, আমার ভাইকে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও সেখানে অক্সিজেন পাওয়া যায়নি। এভাবেই সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে রোগীরা বঞ্চিত হয়ে ফিরে যাচ্ছে। বিরামপুর পৌর শহরের সারংঙ্গপুর গ্রামের রায়হান কবির চপল বলেন, আমার ভাতিজা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। জরুরী বিভাগ থেকে ডাক্তার দেখে বলেন, রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রæত রংপুর মেডিক্যালে বা দিনাজপুর মেডিক্যালে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও নিতে পারলাম না। কারণ
এ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট ছিল ও এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হয়ে আছে। এ রকম আমার ভাতিজার মত অনেক রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন সেবা নিতে এসে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তা দেখার কেউ নেই।
বিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ খায়রুল আলম রাজু বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অচলাবস্থা নিরসনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনাকালীন সময়ে অক্সিজেন জরুরী হওয়ায় এক্সরে মেশিনের পরিবর্তে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালুর কাজ অচিরেই শুরু করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল কুমার রায় বলেন, এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার সাময়িক ভাবে বরখাস্ত থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একমাত্র রোগী আনা নেওয়ায় এ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘ দিন থেকে পড়ে রয়েছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট পদে জনবল সংকট থাকায় আল্ট্রাস্নোগ্রাম ও ইসিজি বন্ধ রয়েছে। অ্যানেসথেসিওলজিষ্ট ডাক্তার ও সার্জন না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সব ধরণের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আর অপারেটর থাকলেও যান্ত্রিক
ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে এক্সরে মেশিন ও জীবানু নাশক ট্যানেল।
তিনি আরো বলেন, উপরোক্ত দূরাবস্থা নিরসনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তার কোন সুরাহা হয়নি। তবে আশা করি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টির মাধ্যমে অচিরেই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।