ঢাকা, সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
শাল্লায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার ঝুমন দাশের জামিন হয়নি
রুবেল আহমদ সিলেট

ঝুমন দাশের মুক্তির দাবিতে স্যোসাল মিডিয়ায় ঝড়।   সুনামগঞ্জের শাল্লায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার ঝুমন দাশ আপনের নিঃশ র্ত মুক্তির দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে স্যোসাল মিডিয়া ফেইসবুক। অসাম্প্রদায়িক চেতনার  বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ তাদের ফেইসবুকে ঝুমনের মুক্তির  দাবি জানান। বিশিষ্ট নাট্যকর্মী ও হাওর টিভির পরিচালক ও সম্পাদক রুবেল শংকর বিশ্বাস তার ফেইসবুক প্রোফাইলে এ ঝুমন দাশ আপনের মুক্তির দাবি জানান। স্ট্যাটাসটি কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।

ঝুমন দাশ আপনের অপরাধটা আসলে কি?

– কোন ধর্মকে কটাক্ষ করেছে?

– ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা কারোর বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে?

– লুটপাট করেছে?

জানামতে, উত্তর হচ্ছে – না।

ঝুমন একজন ব্যক্তির উদ্দেশ্যে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে, যে ব্যক্তিকে নিয়ে এমন নেতিবাচক স্ট্যাটাস দিয়েছে আরো হাজারো জন।

ঝুমন দাশ আপনের অবিলম্বে মুক্তি দাবী করছি। শুধু রুবেল শংকর না ফেইসবুকে শত শত প্রোফাইল থেকে ঝুমনের মুক্তির দাবি জানানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা সুনামগঞ্জের শাল্লায় একটি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালায়। ঘটনায় প্রকাশ হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বক্তব্যের প্রতিবাদে হবিপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন নামে এক যুবক ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন গত ১৬ মার্চ। এ ঘটনাকে ধর্মীয় উস্কানির অজুহাত দিয়ে ওই এলাকার হেফাজত নেতার অনুসারীরা রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং পুলিশ ওই রাতেই ঝুমন দাস আপনকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু ১৭ মার্চ সকালে কাশিপুর, নাচনী, চন্ডিপুরসহ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের মসজিদে মাইকিং করে সেখানে আক্রমণের জন্য লোকজন জড়ো করে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কয়েক হাজার অনুসারী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে অতর্কিত পরিকল্পিতভাবে হামলা- ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

এই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ঝুমন দাস আপনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। যে মামলায় ঝুমন দাস আপন  কারাগারে আটক আছে। ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় সুনামগঞ্জ মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট জামিন প্রদান না করায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ঝুমন দাসের জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু, কয়েক দফা শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত ঝুমনের জামিন মঞ্জুর করেননি।

এড. সুব্রত দাশ খোকন জানান, জামিন পাওয়া যে কোন আসামীর একটি স্বাভাবিক অধিকার,  ব্যতিক্রম বাদে। একই সাথে জামিন প্রদান, বিচারকের স্বাভাবিক কর্তৃক ( ডিসক্রিয়েশন)।  ঝুমন দাশের জামিন না পাওয়া দুটি কারনে খুবই উদ্বেগজনক।  প্রথমত তাকে একটি মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেওয়া হয়েছে, দ্বিতীয়ত নয়াগাঁও যারা আক্রমণ করেছে,  তারা সবাই জামিন পেয়েছে, প্রধান আসামী সহ। কিন্তু নিরপরাধ ঝুমন দাশ কবে জামিন পাবে তা ও আমরা জানি না। রাষ্ট্রের উচিত ঝুমন দাশকে মুক্তির লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা,  এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা।

x