ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন
বাগেরহাটে করোনায় আরো একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৭৩
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাট ঝেলায় করোনা সংক্রমণের হার প্রতিদিনই ওঠানামা করছে। কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েও সংক্রমণের লাগাম টেনে রাখা যাচ্ছে না। বাগেরহাটে চলছে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে করোনা সংক্রমণের হটস্পট জেলার মোংলায় একদিনে ব্যবধানে সংক্রমণ হার তিনগুন বেড়ে ৬৫. ৬২ শতাংশ দাড়িয়েছে। মাংলা উপজেলায় ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১ জন করোনা আক্রান্ত ও একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানাই কারনে বাগেরহাটে করোনা সংক্রামণের হার দ্রæত বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

বাগেরহাট জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্যে শুক্রবার ১৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত ও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় গেল ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার দাড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৪৯ শতাংশে। গত ২৪ ঘন্টার এই আক্রান্তের হার ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা সংক্রমণের হটস্পট জেলার মোংলা উপজেলায় ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের পজেটিভ এসেছে। মৃত্যু হয়েছে একজনের। মোংলায় সংক্রমণের হার ৬৫. ৬২ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টার তুলনায় তিনগুন বেশি। এছাড়া একই দিনে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ২৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। সদরে সংক্রমরণ হার ৬৫ শতাংশ। মোল্লাহাট উপজেলায় ৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মোল্লাহাটে সংক্রমরণ হার ৬৬.৬৬ শতাংশ। শরণখোলা উপজেলায় ৭ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। শরণখোলায় সংক্রমরণ হার ৪২.৮৫ শতাংশ। মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ১৬ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মোরেলগঞ্জে সংক্রমরণ হার ৩১.২৫ শতাংশ। ফকিরহাট উপজেলায় ৭ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। ফকিরহাটে সংক্রমরণ হার ২৬.৬৬ শতাংশ। অন্য উপজেলাগুলোতে সংক্রমণ হার ২০ শতাশেংর কাছাকাছি। এই নিয়ে বাগেরহাট জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ২ হাজার ৮৬৭ জনে। এপর্যন্ত জেলায় মারা গেছে ৭৪ জন। সুস্থ্য হয়েছে ২হাজার ৩৮ জন। এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩৮ জন।

এদিকে, বাগেরহাটে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় জেলাজুড়ে দেয়া সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ প্রতিপালনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা। নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষদের রাস্তায় পেলে তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। মাস্ক না পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে কঠোর বিধিনিষেধে নিন্ম আয়ের মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে।

রিক্সচালক মধু মন্ডল ও জসিম শেখ বলেন, আমাদের আয়ে সংসার চলে। বাড়ির বাইরে না বেরোলে আয় হবে না। আয় না করলে খাব কি? তাই বাধ্য হয়ে বাড়ির বাইরে বের হচ্ছি। রাস্তায় লোকজন কম সেভাবে আয়ও হচ্ছেনা। যে অবস্থা চলছে তাতে গরীর মানুষের বেঁচে থাকাই কষ্ট সাধ্য হয়ে যাচ্ছে।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, বাগেরহাট জেলায় গত দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় শুক্রবার সংক্রমণ হার প্রায় ৫০ শতাংশ। প্রথমে মোংলাতে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। পরে তা আশেপাশের উপজেলাগুলোতেও ছড়াচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। সংক্রমণ রোধের একটাই উপায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে লকডাউন দিয়ে কোন উপকারে আসবেনা। সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, নিজে সুস্থ থাকুন অপরকে সুস্থ রাখতে সহযোগিতা করার আহŸান জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

x