সিলেট সদর উপজেলার শিবের বাজারের দীঘিরপাড় গ্রামে মূল বাড়ি অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের। নগরীর তালতলায় নিজের বাড়িতেই দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বাস করতেন। গত ৩০ এপ্রিল বিকেল তিনটায় শিপা বেগম স্বজনদের ফোন করে তার স্বামীর মৃত্যুর খবর জানান।
এদিকে পরকীয়ার প্রেমের বলি সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য লাশ উত্তোলন করা হবে। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালত থেকে লাশ উত্তোলনের আদেশ পেয়েছেন। সেই আদেশের প্রেক্ষিতে বুধবার (১৬ জুন) সকাল ১১টায় ঘটনার প্রায় ঘটনার ৪৫ দিন পর জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার লাশ উত্তোলন করা হবে। প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য আইনজীবী আনোয়ার হোসেনের লাশ সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
শিপা তখন তিনি বলেছিলেন, ডায়াবেটিস নীল হয়ে তার স্বামী মারা গেছেন। শিপার কথা বিশ্বাস করে স্বজনরা মৃত্যু নিয়ে কোনো সন্দেহ না করে আনোয়ার হোসেনের লাশ গ্রামের বাড়িতে সমাহিত করেন। খটকা লাগে আনোয়ারের মৃত্যুর এক মাস না যেতেই তার স্ত্রীর বিয়ের খবরে। শিপা বেগমের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রণকেলী গ্রামে। স্বামীর মৃত্যুর ১০ দিনের মাথায় তিনি সিলেট জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী মাহি নামে এক যুবককে বিয়ে করেন। কানাইঘাটের ঝিঙ্গাবাড়ির উপরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাহিকে দীর্ঘদিন ধরেই ভালোবাসতেন।
বিয়ের পর শিপা জানান, তাদের আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তাই দুজনে বিয়ে করেছেন। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর আনোয়ার হোসেনের রেখে যাওয়া বাসাতেই নতুন স্বামীকে নিয়ে বসবাস করছিলেন শিপা।
ভাইয়ের বিয়ের ১০ দিন পর ভাবির বিয়ে নিয়ে সন্দেহ হলে খোঁজখবর নেন আনোয়ার হোসেনের ভাই মনোয়ার হোসেন। পরবর্তীতে তিনি মামলা করেন। পরে গ্রেফতার করা হয় শিপাকে। গ্রেফতারের পর শিপাকে রিমান্ডে নিলে তিনি পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। স্বামীকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করা হয় বলে তিনি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) ইয়াছিন আলী। তিনি জানান, সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের দিঘীরপার গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে আনোয়ার হোসেনের লাশ উত্তোলন করা হবে। মাস তিনেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নগরীর তালতলা এলাকার অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী শিপা বেগমের (৩৫) সাথে পরিচয় হয় উপশহর এলাকার বাসিন্দা জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী মাহীর (২৫)। ধীরে ধীরে শিপা ও মাহীর মধ্যে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। অল্পদিনের পরিচয়ে দুজনের প্রেম এতই গভীর হয় যে পথের কাঁটা স্বামী আনোয়ারকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে ছক আঁকেন শিপা ও মাহী। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা করা হয় আইনজীবী আনোয়ার হোসেনকে। স্বামীকে হত্যার মাত্র ১০ দিনের মাথায় মাহীর সাথে বিয়ের পিড়িতে বসেন শিপা। নতুন স্বামীকে নিয়ে শিপা বসবাস শুরু করেন তালতলাস্থ প্রয়াত স্বামীর বাসায়।
তিনি আরও জানান, আইনজীবী আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য তার লাশ কবর থেকে তুলার আদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে ইতোমধ্যে আনোয়ারের স্ত্রী শিপা বেগম পরকীয়া প্রেমের জের ধরে স্বামীকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেছেন বলে রিমান্ডে স্বীকার করেছেন। এমনকি তিনি আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
… [Trackback]
[…] Information to that Topic: doinikdak.com/news/26077 […]
… [Trackback]
[…] Info to that Topic: doinikdak.com/news/26077 […]