জীবিত ব্যক্তিকে মৃত্যু দেখিয়ে তাঁর সুবর্ন নাগরিকের (প্রতিবন্ধী) ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় দুই বছর পর জানতে পারেন তাঁর স্বজনেরা। এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সমাজসেবা অধিদপ্তরে। ওই সুবর্ন নাগরিকের নাম মোসা. পুতুল। বয়স ২৫। জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। হাটা-চলা ও কথা বলতে পারেন না। তিনি উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক গাজীর মেয়ে।
আজ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে ওই বাড়িতে দেখা যায়, পুতুল শুয়ে আছে। দেখলেই বোঝা যায় অন্যের সহযোগিতা ছাড়া তিনি কিছুই করতে পারেন না। তাঁর বড় বোন মোসা. আয়েশা বলেন,২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কারখানা শাখার মাধ্যমে নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছিলেন পুতুল। সাত-আট মাসের ভাতা এক সঙ্গে উত্তোলণ করতেন। গত বছরের মাঝামাঝি সময় ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন ভাতার টাকা পুতুলের হিসাব নম্বরে জমা হয়নি। তখন কেউ কেউ বলেন, অপেক্ষা করেন এক সঙ্গে জমা হবে। সম্প্রতি ফের ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন টাকা জমা হয়নি। তাই বিষয়টি জানার জন্য গত বৃহস্পতিবার উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান ভাতাভোগির তালিকায় পুতুল ২০১৯ সালের ১ জুলাই মারা গেছেন।
কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংশ্লিষ্ট ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রিপন সিকদার বলেন,‘পুতুল জীবিত। অথচ তাঁকে মৃত্যু দেখিয়ে ভাতা বন্ধ করে দেওয়া খুবই দুঃখজনক।’ কাছিপাড়া আবদুর রশিদ মিয়া ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক আবু হাসান ওরফে মিরন বলেন,‘একজন সুবর্ণ নাগরিক ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। যাঁরা একজন জীবিত ব্যক্তিকে মৃত্যু বানিয়ে ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে তাঁদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।’
ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন,‘এমনটি কিভাবে হল বলতে পারছি না।তবে পুতুল জীবিত আছে।’ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন,‘মারা যাওয়ার তথ্য কিংবা নতুন প্রতিবন্ধী তালিকাভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউনিয়ন ভাতা বাছাই কমিটি। যে কমিটির সভাপতি হলেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সবাই ওই কমিটির সদস্য। এরপরেও কিভাবে এমন ভুল হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। তবে বিষয়টি জানার পর তাঁকে (পুতুল) তিন মাসের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুব শিগগির বাকি মাসের টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’