ঢাকা, রবিবার ০৫ মে ২০২৪, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুরে মাসুম হত্যার ঘটনায় কাউন্সিলর সাফরোজকে মামলায় অর্ন্তভূক্ত করা ও আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার আলোচিত ফুটবলার মাসুম হত্যাকান্ডের ঘটনায় ঐ পৌরসভার ৮নং কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম মুন্নাকে মামলায় অর্ন্তভূক্ত করাসহ সকল আসামীদের দ্রæত গ্রেপ্তারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকালে নিহত মাসুমের পরিবার ও স্বজনদের আয়োজনে সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন শিল্পকলা একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের আপন ছোটবোন মামলা বাদি তমা আক্তার।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, জগন্নাথপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব ভবানীপুরে আমার শশুড়বাড়ির নিজস্ব উঠান দিয়ে পাশের বাড়ির সুরুজ আলী ও তার ছেলেরা জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করার জন্য প্রায় সময়ই হুমকি দামকী দিয়ে আসছিলেন। তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে বর্তমান পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম মুন্নার।  আমার ভাই ফুটবলার মাসুম ছোটবেলা থেকেই আমার শশুড়বাড়ি থেকে বড় হয়েছেন। গত ১৬ই এপ্রিল কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম মুন্না দুপুর আনুমানিক আড়াইটায় আমাদের বাড়িতে এসে আমার ভাই মাসুমকে ঘুম থেকে ডেকে উঠানে নিয়ে বাশেঁর বেড়া তুলে দেয়ার জন্য নিদেশ দিলে মাসুম তা প্রত্যাখান করেন। এ সময় কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম মুন্নার সামনে প্রতিপক্ষ সুরুজ আলী,তার ছেলে রুবেল মিয়া ও নাজমুল হক লিয়নের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন লোক লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রথমে আমার ভাই মাসুমের মাথায় আঘাত করে এবং পরে শরীরের বিভিন্ন অংশে পিঠানোর ফলে সে সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আমার মা বার বার আমার ভাইকে বাচাঁনোর জন্য কাউন্সিলরের নিকট হাতজোড় করে প্রানভিক্ষা চাইলেও তিনি কোন কর্ণপাত করেননি। বরং কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম মুন্না  এ সময় উঠানে দেয়া বাশেঁর বেড়া উপড়ে ফেলেন। তাৎক্ষনিক আমরা মাসুমের অবস্থা গুরুতর দেখে প্রথমে তাকে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে নিয়ে গেলে তার অবস্থার আরো অবণতি হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। ঐদিন তাকে সিলেট ওসমানীতে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন । এই ৮নং ওয়াডের সাবেক তিনবারের কাউন্সিলর আবাব মিয়া কাউন্সিলর থাকাকালীন অবস্থায় আমাদের উঠানের উপর দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণের কথা কোনদিন বলেননি। কারণে প্রতিপক্ষ সুরুজ আলী গংদের বাড়ি থেকে একটি বিকল্প পাকা রাস্তা থাকায় তিনি কোনদিন কোনপক্ষের সাথে এ বিষয়ে কোন আলোচনাই করেননি। বর্তমান কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েই আমাদের নিজস্ব উঠানের উপর দিয়ে প্রতিপক্ষ সুরুজ আলী গংদের জন্য আমাদের বাশেঁর বেড়া তুলে রাস্তা নির্মাণ করে দেয়ার মানেই আমার ভাই ফুটবলার মাসুমকে পরিকল্পিতভাবে কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম মুন্নার নেতৃত্বে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।  আমার ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে কাউন্সিলর সাফরোজ ইসলাম তাকে যেন মামলায় আসামী করা না হয় সেজন্য তিনি বিভিন্নভাবে আমাদেরকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তাই জীবনের ভয়ে ১৫জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০জনের নাম উল্লেখ করে গত ১৯ এপ্রিল ২০২১ইং তারিখে জগন্নাথপুর থানায় নিজে বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। যার মামলা নম্বর- ০৯-১৯/০৪/২০২১ইং। তবে মামলায় কাউন্সিলর সাফরোজকে অজ্ঞাতনামা আসামীর মধ্যে রাখা হলে বর্তমানে তিনি সরকার দলীয় লেবাসে বিভিন্ন জায়গাতে অপপ্রচারসহ বিভিন্নভাবে আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনকে হুমকি দামকী দেয়ার কারণে এই মামলায় তাকে অর্ন্তভূক্ত করার জন্য সরকার ও আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট দাবী জানান। এই মামলায় এ যাবত ৪জন আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করলেও ১জন আসামী কিছুদিন আগে জামিনে মুক্তিলাভ করে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদেরকে হুমকিদামকী অব্যাহত রেখেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন,জগন্নাথপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মো. সুহেল আহমদ,নিহতের মামা মো.আলী আহমদ,যুবলীগ নেতা সাবুল মিয়া,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল পরান,নিহত মাসুমের আপন চাচাতো ভাই আব্দুল লতিফ,সিজিল মিয়া,ফুফাতো ভাই আব্দুল বারিক,সালিশ ব্যক্তিত্ব মো. মানিক মিয়া তালুকদার,সমাজসেবক রেজাউল করিম রাজু প্রমুখ।

One response to “জগন্নাথপুরে মাসুম হত্যার ঘটনায় কাউন্সিলর সাফরোজকে মামলায় অর্ন্তভূক্ত করা ও আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন”

  1. … [Trackback]

    […] There you can find 96610 additional Info to that Topic: doinikdak.com/news/25405 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x