ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৪ অপরাহ্ন
মোরেলগঞ্জে ইয়াসের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন এম,পি
Reporter Name

মো.মাহাবুব আলম, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)প্রতিনিধি ঃ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের সড়ক, কৃষি, মৎস্য  ও বিদ্যুৎ  সহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে কাচাঁ-পাকা রাস্তা ও বেড়িবাঁধ। স্থানীয় সংসদ সদস্য দুর্যোগ ও ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশে আঘাত না হানলেও এর প্রভাবে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার মোরেলগঞ্জের  বলেশ^র ও পানগুছি নদী সহ খাল বিলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্মা ল প্লাবিত হয়। ডুবে যায় ফসলি জমি ও নিচু ঘরবাড়ি। পানিবন্দী হয় পড়ে ১৫ হাজার পরিবার। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে খাউলিয়া, মোরেলগঞ্জ সদর, বারইখালী, হোগলাবুনিয়া, বহরবুনিয়া, বলইবুনিয়া, চিংড়াখালী ও প করণ ৮ ইউনিয়নের খাউলিয়া, সন্ন্যাসী, গাবতলা, কুঠিবাড়ি, কাঠালতলা, বিশারীঘাটা, সানকিভাঙ্গা,বারইখালী, শ্রেণিখালী ,ঘষিয়াখালী, ছাপড়াখালী, কুমারিয়া জোলা, সোলমবাড়িয়া সহ  প্রায় ২০টি  গ্রাম।

উপজেলার  মৎস্য অফিস সূত্রে জানা জায়, উপজেলা ৭৫০ হেক্টর জমির ৯ হাজার ৯২৫ টি মৎস্য ঘেরের মধ্যে ১ হাজার ২২ টি ঘের সম্পূর্ণ ডুবে গিয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।  বহু ফসলি জমি ডুবে গিয়ে কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিলেও বৃহপতিবার পর্যন্ত  প্রকৃত ক্ষয় ক্ষতি নিরুপন করতে পারেনি বলে উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে জানা যায়। বিদ্যুৎ খাতেও উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বেশ কিছু বৈদ্যুতিক তার, বৈদ্যুতিক খুঁিট, ট্রান্সফরমার ও মিটারের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। মোরেলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ  জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, তাদের ৬২ টি স্কট তার কোডা, ২ টি বৈদ্যুতিক  খুঁটি ভেঙ্গে গেছে এবং ১৫ টি খুঁটি হেলে পড়ে, ৫ টি ট্রান্সফরমার ও কিছু মিটার  নষ্ট হয়েছে ।

উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সিংজোড় গোপালপুর কলেজ এবং গোলবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানা যায়।

ইয়াস ও ভরা কোটালের প্রভাবে গত  দুদিনের জলোচ্ছ¡াসে নদী তীরবর্তী বেশ কিছু বেড়িবাঁধ  ভেঙ্গে জোয়ারের পানি ঢুকে  ১০ হাজারেরও বেশি পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়ে। জোয়ারের পানি  মোরেলগঞ্জের শহর রক্ষাবাঁধ উপচে মোরেলগঞ্জ বাজার, উপজেলা সদর,বারইখালী, ফেরিঘাট, সোলমবাড়িয়া বাসষ্ট্যান্ড, কুঠিবাড়ি ও গাবতলা এলাকা প্লাবিত হয়।  এতে আরো প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। গত ২ দিনে ধরে প্রায় ২ শ’ পরিবারের রান্না বন্ধ রয়েছে ।

এদিকে, জলোচ্ছাসে ১২ টি পাকা রাস্তা , ২ টি লোহার ব্রিজ ও বহু গ্রামীণ পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।  উপজেলার বারইখালীর ফেরিঘাট হতে ১০ কিমি.কাঁচা পাকা রাস্তা বিলীন হয়েছে। রাস্তা বিলীন হওয়ায় মোরেলগঞ্জ সদরের সাথে বারইখালী ও বহরবুনিয়া ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে ৭৭৫ হেক্টর জমি।

এদিকে, খাবার পানির আধার  উপজেলা পুকুর, এসএম কলেজ পুকুর,এসিলাহা পাইলট স্কুলের পুকুর, কাউন্সিলের পুকুর সহ সবগুলো পুকুর সমুদ্রের লবনাক্ত পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে খাবার পানি সহ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সবগুলো পুকুরের পানি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড.আমিরুল আলম মিলন বারইখালী ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাঁধ ও  সদর ইউনিয়নের গাবতলা ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে, উপজেলার পানিবন্দী এসব পরিবারের কাছে সরকারি কোন ত্রাণ সামগ্রী পৌছাঁনোর খবর বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

 

x