ঢাকা, রবিবার ০৪ জুন ২০২৩, ০৮:২৫ অপরাহ্ন
ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
Reporter Name

সৃষ্টিজগতের প্রতিপালক, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা মহান আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করার এক অনন্য মাধ্যম যাকাত। ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। ইসলামের মৌলিক পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে এটি অন্যতম। যাকাত আদায়ের মাধ্যমে সর্বশক্তিমান আল্লাহ বান্দাহ’র সম্পদ পবিত্র করে দেন এবং সম্পদের পরিমান বাড়িয়ে দেন।

রমযানের রোযা রহমতের দশ দিনের পর মাগফিরাতের দশ দিনও প্রায় অস্তায়মান। বছরের যেকোন সময়ের থেকে রমজান মাসে যাকাত আদায়ের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। কেননা এ সময় আল্লাহ বান্দার প্রত্যেকটি নেক আমলের সাওয়াবকে সত্তর গুণ বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ চাইলে এর সাওয়াব অগণিত হতে পারে।

পবিত্র কুরআনে বহুবার নামাজের সাথে যাকাত আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কালামে হাকিমে বলেন: ‘আর তোমরা নামাজ কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর’। [ সূরা মুযযাম্মিল, আয়াত ২০]

যাকাত ধনীদের দয়া বা অনুগ্রহ নয় এটি বরং দরিদ্রের অধিকার। তাই যাকাত আদায় করা ধনীদের উপর ফরজ। আল্লাহ বলেন: ‘তাদের অর্থাৎ ধনীদের ধন-সম্পদে অবশ্যই দরিদ্র ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে’। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত ১৯]

যাকাত দানকারীর পুরস্কার ও কৃপণ ব্যক্তির দু:সংবাদ বিষয়ে হাদিসের কিতাব সহীহ তিরমিঝিতে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন: ‘দানশীল ব্যক্তি আল্লাহর নিকটবর্তী, জান্নাতের নিকটবর্তী, আল্লাহর বান্দাদের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম থেকে দূরবর্তী। অপরদিকে কৃপণ আল্লাহ থেকে দূরে, আল্লাহর বান্দাদের থেকে দূরে এবং জাহান্নামের নিকটে। একজন জাহিল দানশীল একজন কৃপণ আবিদ তথা ইবাদতকারী অপেক্ষা আল্লাহর কাছে অনেক বেশি পছন্দনীয়’।

যাকাত আদায়ের ব্যাপারে হুশিয়ার করে আল্লাহ তায়ালা কুরআনের সূরা তাওবা’(আয়াত ৩৪-৩৫)তে বলেছেন: যারা সোনা রুপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদেরকে কষ্টদায়ক শাস্তির সংবাদ দাও। সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং  তা দিয়ে কপালে, পাঁজরে এবং পিঠে দাগ দেওয়া হবে, সেদিন বলা হবে  এ তো সেই সম্পদ যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। এখন সে সঞ্চিত সম্পদের স্বাদ গ্রহণ কর।

পার্থিব জীবনে যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে তারা বাস্তব জীবনে  কৃপণ হিসেবে আখ্যায়িত হয় আর পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন: ‘ধ্বংস সেসব মুশরিকের জন্য, যারা যাকাত দেয় না এবং আখিরাত তথা পরকালকে অস্বীকার করে’। [সূরা হা-মিম সাজদাহ, আয়াত ৬-৭)

প্রত্যেক মুুমিন বান্দার উচিত পরকালের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় যথাযথভাবে যাকাত আদায় করা। অন্যকে যাকাত দানে উৎসাহিত করা। যাকাত আদায়ের মাধ্যমে সমাজের অসহায় দরিদ্রের উন্নতি করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x