ঢাকা, সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন
শরীয়তপুর ইজারাবিহীন রয়ে গেল তিন কোটি টাকার সখিপুর গো-হাট
Reporter Name

মোঃ রুহুল আমিন: অবশেষে ইজারাবিহীন রয়ে গেলো শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলাধীন সখিপুর বাজার গো-হাট। সখিপুর থানার ঐতিহ্যবাহী এ বাজারটি গত বছরও ভ্যাট, আয়কর বাদে ৩ কোটি টাকায় ইজারা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু করোনা মহামারি, অতিরিক্ত মূল্য ও লোকসানের মুখে এ বছর কোন পক্ষই হাটের সিডিউল ক্রয় করে নি। ফলে ঐ হাটে খাস কালেকশন শুরু করেছে ভেদরগঞ্জ উপজেলা খাস কমিটি। তবে এক্ষেত্রে রাজস্বের লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, শরীয়তপুরের সখিপুর থানাধীন ঐতিহ্যবাহী সখিপুর গো-হাট প্রতিবছরই কোন না কোন পক্ষ ইজারা নিয়ে থাকে। বাংলা নববর্ষে বৈশাখ মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত এক বছরের জন্য ইজারা দেয়া হয় এ গো-হাট। প্রতি বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গরু-ছাগলের হাট বসে সেখানে। শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শত শত গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয়ের অন্যতম হাট এটি। যা চরাঞ্চলে বিখ্যাত।

গত বছর ১৪২৭ সনে ৩ কোটি টাকা ইজারা মূল্য দিয়ে এক বছরের জন্য এ হাট কিনে নেয় স্থানীয় বিএনপি নেতা নাজমুল আহসান সরদার। যা ভ্যাট, আয়কর ও জামানত সহ ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা দাঁড়িয়েছিল। এর আগের ১৪২৬ সনে আরেক স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন সরদার ২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা ইজারা মূল্যে এ হাট কিনেছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে হাট বন্ধ থাকায় গত বছরের ইজারাদার নাজমুল আহসান সরদার ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে। পরবর্তীতে তিনি করোনাকালীন সময়ে বন্ধ থাকা হাটের ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোটের দ্বারাস্থ হোন। এ রিটের শুনানি এখন চলমান রয়েছে।

সে ধারাবাহিকতায় এ বছরের (বাংলা ১৪২৮) জন্য ২কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা সম্ভাব্য মূল্যে সখিপুর গো-হাটের দরপত্র আহবান করে সরকার। কিন্তু ৩ দফা দরপত্র আহবানের সময় শেষ হলেও করোনা মহামারি, অতিরিক্ত মূল্য ও লোকসানের মুখে এ বছর কোন পক্ষই হাটের সিডিউল ক্রয় করে নি। ফলে এ বছর ঐ হাট থেকে রাজস্ব উত্তোলন শুরু করেছে ভেদরগঞ্জ উপজেলা খাস কমিটি।

গত বছরের ইজারাদার সদস্য কামরুল হাসান রাজিব সরদার বলেন, গত বছর করোনাকালীন সময়ে ৭টি হাট বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যাপক লোকসান হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারাস্থ হয়েছি, সে রিটের শুনানী চলমান রয়েছে। কিন্তু এখনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। এছাড়া অতিরিক্ত সম্ভাব্যমূল্য ও করোনা মহামারির কারণে আমরা এ বছর নিলামে অংশ নিতে পারি নাই। যদি সব কিছুর সমন্বয়ে পরিবর্তীতে সুযোগ দেয়া হয় আমরা অবশ্যই নিলামে অংশ গ্রহন করবো।

সাবেক ইজারাদার সদস্য ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার বলেন, প্রতিযোগীতা কারণে হাটের ইজারা মূল্য অনেক বেড়ে গেছে। এতে জনগনের কাছ থেকে আগে টাকা ৭শ করে সংগ্রহ করলেও এখন ১হাজার করে তুলতে হয়। জনগনের উপর চাপ পড়ে। এছাড়া আবার লকডাউন। জনপ্রতিনিধি হয়ে আমরা অতিরিক্ত টাকা তুল গেলে বদনাম হয়ে যায়। মূলত এ কারনেই এ বছর আমরা নিলামে অংশ নেই নাই।

এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব তানভীর আল নাসীফ বলেন, তিন দফা দরপত্র আহবান শেষ হলেও কেউ এ গো-হাটের ইজারা নেয়নি। ফলে উপজেলা খাস কমিটির মাধ্যমে এ হাট থেকে রাজস্ব আদায় শুরু করা হয়েছে। প্রান্তিক খামারীদের কথা বিবেচনা করে করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ হাটের কার্যক্রম চলবে

x