শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের ভ্যান চালক, হতদরিদ্র পিতা আহসান উল্লাহর সন্তান সুজন মিয়া (১৮) পেলো ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ।
সে এবার মেডিকেল (এমবিবিএস) ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশে ১৪৬ তম স্থান দখল করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। জানা যায়, সুজনের মায়ের নাম কবিতা বানু। ৩ ভাই ও ১ বোন নিয়ে সংসারের পুরো দায়িত্বই পিতার কাঁধে। পিতা আহসান উল্লাহর নিজের বলতে ৪০ শতক জমি ছিল, যা থেকে বছরের কয়েক মাস জুটতো পেটের খাবার। কিন্তু সেটিও এগ্রিমেন্ট দিতে হয় ছেলেকে মেডিকেল কোচিংয়ে ভর্তি করতে।
এজন্য পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে দিন-রাত ভ্যান গাড়ী চালাতে হয় বাবা আহসান উল্লাহকে। তবে তিনি কখনো নিজের কষ্টের কথা সন্তানদের কখনোই বুঝতে দিতেন না। তবে বাবার এ কষ্টের কথা ঠিকই বুঝে ছিল অদম্য সুজন। তিনি তার পিতার কষ্টকে বৃথা যেতে দেননি। সুজন জানায়, আমি অভাবের বোঝা মাথায় নিয়ে কাপাশিয়া শহীদ স্মৃতি স্কুলে অষ্টম শ্রেণী, তারাগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও হাজী নূরল হক নন্নী পোড়াগাও মৈত্রি কলেজ থেকে জিপিএ -৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করি।
মেডিকেলে ভর্তির জন্য ময়মনসিংহের উন্মেষ মেডিকেল কোচিং এ কোচিং করি। সবার দোয়ায় আমি ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। সে আরও জানায়, আমার ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে বায়ো টেকনোলজিতে পড়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু একদিন একটা মাকে নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ডাক্তারের অবহেলার ভাব দেখে মেডিকেলে পড়ার প্রাথনা করেছিলাম আল্লাহর কাছে।
আল্লাহ আমার সে প্রার্থনা কবুল করেছে। হাজী নূরল হক কলেজের অধ্যক্ষ লুতফুর রহমান মুক্তা জানান, এবার আমার কলেজের ৩ জন মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। অপর ২ জন হলো- স্কুল শিক্ষকের পুত্র বাধন চন্দ্র রুদ্র, গুজাকুরা গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের পুত্র ফেরদৌস।
তিনি আরও জানান, কলেজ বিনা বেতনে সুজনকে পড়িয়েছে। সাধ্যমত সহযোগিতা করেছে। তার সফলতায় আমরা আনন্দিত। এদিকে কলেজ থেকে ৩ জন মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন হাজী নূরল হক নন্নী পোড়াগাও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও জিবি সভাপতি আলহাজ্ব কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা। শনিবার সকালে নালিতাবাড়ী ডায়াবেটিক হাসপাতালে উত্তির্নদের মিষ্টি মুখ করিয়ে তাদের অভিনন্দন জানান তিনি।