ঢাকা, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৪ অপরাহ্ন
হাসপাতালে আরো ২০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার চালুর নির্দেশ
Reporter Name

সিলেটে কোভিড হাসপাতালে ঠাঁই হচ্ছে না রোগীর। এ কারণে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরো ২০০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ওই ওয়ার্ড প্রস্তুত করার তাগিদ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এতে অক্সিজেন ব্যবস্থাও স্বাভাবিক করার কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিলেটে দ্রুতই বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে কেউ বলতে পারছেন না। এ কারণে ওসমানীতে ২০০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। এদিকে- সিলেটের কোভিড হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে রোগীতে ভর্তি।

ক’দিন ধরেই ঠাঁই হচ্ছে না রোগীর। এ হাসপাতালে আইসিইউ মিলে বেড রয়েছে ১০০টি। ৮২টি রয়েছে সাধারণ বেড, ১৬টি আইসিইউ। এক সপ্তাহ ধরেই হাসপাতাল রোগীতে পরিপূর্ণ। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদেরকে আলাদা রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় মানবজমিনকে জানিয়েছেন, হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড ও বেড আগে থেকেই রয়েছে।

রোগীদের এখানে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নতুন করে আরো ২০০ বেডের আইসোলেশন প্রস্তুত রাখার কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন- ‘আমরা হাসপাতালের নতুন ভবনে ২০০ শয্যার একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড করবো। সেখানে অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই। অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়েই আমরা আইসোলেশন ওয়ার্ড করতে চাই। এবং সেটি দ্রুত করা হবে বলে জানান তিনি।’ এদিকে বেসরকারি আইসিইউ থেকে সরকারি আইসিইউতে ঝুঁকছে রোগীরা।

এ কারণে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তের রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে আইসিইউ’র জন্য হাহাকার চলছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুশান্ত মহাপাত্র জানিয়েছেন- ‘আমরা আইসিইউতে প্রতিনিয়ত লড়াই করছি। আইসিইউতে সিরিয়াস রোগীদের নেয়া হয়। তবে আশার কথা হলো শামসুদ্দিন হাসপাতালে আইসিইউতে মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম। দিন দিন সিরিয়াস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান তিনি।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. নুরে আলম শামীম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সিলেটে আইসিইউ সুবিধা বাড়াতে আমরা ইতিমধ্যে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। তবে আমরা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা অক্সিজেনে জোর দিচ্ছি। কারণ, অক্সিজেনের মাধ্যমে সাধারণ বেডেই অনেক  রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। একই সঙ্গে ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অন্তত ২০০ আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সিলেট বিভাগের চার জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে কোভিড  রোগীদের চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে আইসিইউ বেড রয়েছে ২১টি। এর মধ্যে শহিদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১৬টি ও মৌলভীবাজার হাসপাতালে পাঁচটি। সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউর ব্যবস্থা  নেই। চিকিৎসার মান ও সেবা ভালো হওয়ায় রোগীর অবস্থা খারাপ হলেই স্বজনরা রোগী নিয়ে ছুটে আসছেন শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের চারটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ১৯৫ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলার ১৬৩ জন, হবিগঞ্জের ৭ জন ও  মৌলভীবাজারের আরো ২৫ জন রয়েছেন। সিলেট বিভাগে করোনা প্রমাণিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৩৩ জন।

এর মধ্যে শুধুমাত্র সিলেট জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৬৫২ জন। এ ছাড়া- সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৬২৪ জন, হবিগঞ্জে ২ হাজার ১২২ জন ও মৌলভীবাজারে ২ হাজার ১৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা ২৯৯ জন। এদিকে করোনা বাড়ছে সিলেটে; মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। লকডাউন দেয়া হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x