ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। একইসঙ্গে বেড়েছে লবণ দিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাতের খরচ। ফলে চামড়া সংগ্রহে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। এতে কোরবানির চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
গত ঈদুল আজহায় চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে সিলেটের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা লক্ষাধিক চামড়া রাস্তা ও নদীতে ফেলে দিয়েছিলেন। এতে ওইসময় নগরজুড়ে আবর্জনা ও দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। তাই এবার এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।
নিজেরাই চামড়া পক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিসিক। চামড়া প্রক্রিয়াজাতের জন্য নগরের দক্ষিণ সুরমার পারাইচকে সামিয়ানা টাঙিয়ে খোলা হয়েছে অস্থায়ী প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র।
বুধবার (২১ জুলাই) ঈদের দিন রাত পর্যন্ত প্রায় এক হাজার চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে এখানে।
জানা যায়, এই অস্থায়ী প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে যে কেউ চামড়া নিয়ে গেলে বিনা পয়সায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে দিচ্ছে সিসিক। পাশাপাশি যদি কেউ চামড়া বিক্রি করতে চান সেটিও ক্রয় করছে সিসিক। এখানে এগুলো প্রক্রিয়াজাতের শেষে ঢাকায় পাঠানোর কথা জানায় সিসিক।
সিসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান বলেন, বিগত ঈদুল আজহায় দাম না পেয়ে অনেকে চামড়া ফেলে দিয়েছিলেন। এছাড়া নগরের যত্রতত্র প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াই চামড়া বিক্রি করতে দেখা গেছে। এতে পরিবেশেরও ক্ষতি হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, চামড়া নষ্ট হওয়া কমাতে ও নগরের পরিবেশ রক্ষায় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নির্দেশে বিনা পয়সায় প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিসিক।
তিনি বলেন, এবছর আমরা প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া নগরের কোথাও চামড়া বিক্রি করতে দিচ্ছি না। আগে নগরের রেজিস্টারি মাঠে প্রক্রিয়াজাতহীন কাঁচা চামড়া নিয়ে রীতিমতো মেলা বসে যেত। আর এসব চামড়ার বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতো। পরিবেশের রোধে এবার কাউকে সে সুযোগ দেয়া হয়নি।
সিলেট শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো.শামীম আহমদ বলেন, দাম কমে যাওয়া, লকডাউন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, পরিবহন সমস্যা, ট্যানারি মালিকদের বকেয়া পরিশোধে গড়িমসিসহ নানা জটিলতায় চামড়া ব্যবসায় আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। আমরা এবার লাখখানেক চামড়া সংগ্রহ করতে পারি। তবে সিসিক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়ায় এবার হয়তো চামড়া নষ্ট হওয়া রোধ করা সম্ভব হবে।