ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন
সড়ক চলাচলের অনুপযোগী, ভোগান্তিতে রাজনগর জলের গ্রাম খ্যাত অন্তেহরির মানুষ
এম. মুসলিম চৌধুরী শ্রীমঙ্গল

একমাত্র সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায়, চরম ভোগান্তিতে রাজনগর জলের গ্রাম খ্যাত অন্তেহরির মানুষ

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার জলের গ্রাম অেেন্দহরি ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাদিপুর গ্রামে সংযোগ রাস্তাটি গত ৮ বছর ধরে ভেঙে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে আছে।

পুরো দুই গ্রামের মানুষের চলাচলের রাস্তাটি পুরোটাই এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ বস্থায় গ্রাম দুটির মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ। সংশ্লিষ্টদের কাছে বার বার ধর্না দিয়েও কোন ফল পাচ্ছেন না গ্রামবাসী। চলমান বর্ষা মৌসুমে রাস্তার জন্য এ দুই গ্রামের মানুষ  এক প্রকার বন্দি হয়েই আছেন। এ বস্থায় বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত ৪ দিন দিনব্যাপী রাজনগর ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশের নেতৃত্বে দুই গ্রামের শতাধিক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে পলিমাটি ও আধভাঙা ইট দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার মেরামত করছেন।

রাস্তাটির ব্যাপারে রাজনগর, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ বলেন, এটি অন্তেহরি গ্রামটি জলের গ্রাম হিসে পরিচিত রয়েছে। এ গ্রামে প্রাচীন জমিদার বাড়ির থাকার ফলে এখানে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে।  কিন্তু রাস্তাটির বেহাল অবস্থায় পর্যটকরা এ গ্রামে আসতে পারেছেননা। এ দুই গ্রামের মানুষ কাউয়াদিঘি হাওর থেকে শতশত টন বুরো ধানের ফলন করেন। এবং হাওর থেকে কোটি কেটি টাকা মৎস্য আহরণ করেন। এসব পরিবহনের কারণে গ্রামে এ পথে  প্রচুর যানবাহনের আসা যাওয়া রয়েছে। রাস্তা মেরামতে স্বেচ্ছা শ্রমে অংশ নেয়া গ্রামের বাসিন্দা দিজেন্দ ্রদাশ বলেন, দুই গ্রামে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। এই মানুষগুলোর  জেলা ও উপজেলা শহরের সাথে যোগযোগের এক মাত্র রাস্তা এটি। রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় পায়ে হাঁটাই একমাত্র অবলম্বন। আর বৃষ্টি হলে পায়ে হাটাঁ ও দুরহ হয়ে পড়ে।

গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক পুলক দাশ জানান, এই গ্রামে ৩টি প্রাইমারী স্কুল ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। রাস্তাটির জন্য শিক্ষার্থীদেরও দূর্ভোগ পোহাতে হয়।

গ্রামের অপর বাসিন্দা মঞ্জু চক্রবর্তী  ও সাবেক মেম্বার গণপতি দাশ তরুণ জানান, রাস্তাই  তাদের দু:খ। প্রধানমন্ত্রীর যে ঘোষনা গ্রাম হবে শহর এই রাস্তা নাহলে তা হবেনা।

এ সময় কাজে যোগ দেয়া আখাইলকুড়া  উনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য গোপেশ সরকার-জানান, এতো এতো ফসল এই কাউয়া দিঘি হাওর থেকে উঠে। বিল থেকে মাছ উঠে। জেলার খাদ্যসষ্য ও মাছের বড় একটি চাহিদা পুরণ করে এই হাওর। এখান থেকে প্রচুর রাজস্ব আদায় হয়। অথচ এই হাওরে ও হাওর পাড়ের দুটি গ্রামে আসার রাস্তা নেই কেন?

অন্তেহরি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী ও বর্তমান ইউপি সদস্য অমর দাশ বলেন, এই সময়ে গ্রামের অসুস্থ রোগী নিয়ে তারা চরম দুশ্চিন্তায় থাকেন। রেগীকে চিকিৎসার জন্য  কাঁধে বহন করে,  নিয়ে যেতে হয় শহরে। তারা বলেন রাজনগর উপজেলা সদরে ও মৌলভীবাজার জেলা সদরে যেতে হলে এই ভাঙ্গা রাস্তা দিয়েই যেতে হয়। অমর দাশ বলেন,  রাস্তার জন্য সন্তানসম্ভবা মায়েদের হাসপাতালে নিতেই ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। বর্ষা মৌসুমে একেবারে ভেঙে যাওয়া এই রাস্তাটি মেরামতে এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x