ঢাকা, সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:২৭ অপরাহ্ন
রংপুরে ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে না প‍্যারাসিটামল ঔষধ
হীমেল মিত্র অপু স্টাফ রিপোর্টার

রংপুর জেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় দিন দিন করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সংক্রমণের হার ৪০ শতাংশের উপরে। রংপুর বিভাগে সংক্রমণ বৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রংপুর জেলা। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতাল গুলোতে বেড়েই চলেছে রোগীর চাপ, সেই সাথে বাড়ছে প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদা। করোনায় আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি সাধারণ রোগীর চাহিদা অনুযায়ী নাপা, নাপা এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন্ড, এইচ প্লাস, নাপা সিরাপসহ প্যারাসিটামল।

জাতীয় কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে জেলার বিভিন্ন ফার্মেসীগুলোতে। চারিদিকে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও যখন বাড়ছে তখন প্যারাসিটামল জাতীয় এই ওষুধ গুলোর সরবরাহ না থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে মানুষের।

আজ ( ৫ জুলাই) সোমবার সকাল হতে দুপুর পযর্ন্ত জ্বরের ঔষধ এইচ প্লাসের জন্য এক ফার্মেসী থেকে অন্য ফার্মেসি ঘুরছিলেন নগরীর বাবু খাঁ এলাকার সজীব আহমেদ । বেশ কয়েকটি ফার্মেসি ঘুরে জ্বরের জন্য এইচ প্লাস খুঁজে পাননি তিনি।

রংপুর নগরীর মেডিকেল মোড় এলাকায় চাহিদা পত্র নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরেও ওষুধ না পাওয়া সালেহা রহমান বলেন, আট বছরের ছেলের জ্বরের জন্য ওষুধ নিতে এসেছিলাম। কিন্তু বড় বড় কয়েকটি ফার্মেসি ঘুরেও পর্যাপ্ত ওষুধ মিলে নি।

নগরীর জাহাজকোম্পানি মোড়ে একটি ফার্মেসিতে জ্বরের ওষুধ খুঁজতে ছিলেন কলেজ শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জুয়েল। তিনি জানান, জাহাজকোম্পানি ও এর আশপাশ বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে এক পাতা নাপা ওষুধ সংগ্রহ করেছি। তবুও বেশিদামে।

নগরীর লালবাগ বাজারের সিয়াস ফার্মেসির মালিক সিয়াম হোসেন বলেন, ‘জ্বরের ওষুধ এইস, এইস প্লাস, এইচ এক্স আর ট্যাবলেট, ফাস্ট, ফাস্ট এক্স আর ওষুধেরও সঙ্কট আছে। কোম্পানি যে পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করে তা চাহিদার তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। গত ৭ থেকে ৮ দিন ধরে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই কোম্পানি গুলোতে ওষুধের জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তবে সরবরাহ না থাকায় আমাদেরও কিছু করার থাকছে না।

নগরীর লালবাগ বাজারের সিয়াস ফার্মেসির পাশের ফার্মেসির জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, হঠাৎ করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জ্বরের ওষুধের চাহিদা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। আপাতত নাপা ও এইস গ্রুপের অন্য ওষুধ দিয়ে ক্রেতাদের বিদায় করা হচ্ছে। আরও বেশী সময় নাপা ও এইস ট্যাবলেট ও সিরাপের সরবরাহ না থাকলে ভোগান্তি বাড়বে। জেলার উপজেলা গুলো জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বেলাল আহমেদ বলেন, এই জাতীয় ঔষধ সংকট হওয়ার কোন কারণ দেখছি না। এটি সংশ্লিষ্ট ওষুধ কোম্পানির পরিকল্পিত কাজ কি না তদন্ত করে দেখা উচিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

রংপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহামুদুল ইসলাম মৃধা বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফার্মেসী গুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। কোন ফার্মেসীতে এই ঔষধগুলোর কৃত্রিম সংকট তৈরী করলে এবং বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রংপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ হিরম্ব কুমার রায় বলেন, বাজারে প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধের সঙ্কট থাকার কথানয়।তবুও কোনো ফার্মেসীতে এই ঔষধগুলোর কৃত্রিম সংকট তৈরী করলে ফার্মেসী গুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

x