দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। আজ সোমবার (২৬ জুলাই) রংপুর বিভাগে একদিনে ১৬ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ৮ জেলায় তাদের মৃত্যু হয়। একই সময়ে দুই হাজার ৪৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬৭৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ২৬ দিনে রংপুর বিভাগে ৪০০ জন মারা গেলেন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার আক্রান্ত হয়ে রংপুরে সাত জন মারা গেছেন। এছাড়া ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরে তিন জন করে এবং পঞ্চগড়-নীলফামারী ও লালমনিরহাটে একজন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া রবিবার রংপুরে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫৫ জনের। আর দিনাজপুরে ১০৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এদিকে করোনায় ১৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. জাকিরুল ইসলাম। এ নিয়ে রংপুর বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮৫৪ জন। আক্রান্তের হার বেড়ে ২৭ দশমিক ৩৬ ভাগে দাঁড়িয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, বিভাগের আট জেলায় করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। এ পর্যন্ত রংপুর বিভাগে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে দুই লাখ চার হাজার ৯৫৪ জনের। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ৪০ হাজার ৭৪৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩০ হাজার ৭৭০ জন।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. জাকিরুল ইসলাম বলেন, সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাট এবং বিভাগীয় শহর রংপুরে করোনা সংক্রমণ আশাংকাজনক হারে বেড়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুরে শনাক্তের সংখ্যা ১১ হাজার ৯৮৮ জন, রংপুরে আট হাজার ৯৩২ জন এবং ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচ হাজার ৬২৬ জন, কুড়িগ্রামে তিন হাজার ৭৪ জন।
স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এবং মাস্ক পরিধান না করায় প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়ছে বলেও জানান ডা. জাকিরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, রাজধানীসহ বিভিন্ন নগরীতে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদাসীনতা রয়েছে। তবে বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে সেটি কিছুটা কমে এসেছে। কিন্তু গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে শতভাগ মানুষ এ বিষয়ে উদাসীন। এ বিষয়ে কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট গ্রামেও পরিচালনা করতে হবে। এ ছাড়া সরকার গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত যে কমিটি গঠন করেছে, সেই কমিটিকে কাজে লাগাতে হবে। মাস্ক ব্যবহার না করলে তাকে শাস্তি ও জরিমানা করতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।