ঢাকা, সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ১২:৪৪ অপরাহ্ন
কমিশন ছাড়া লিচু বিক্রি করবে চাষীরা-ইজারার আওতায় সেই লিচুর আড়ত
Reporter Name
প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কমিশন ছাড়া লিচু বিক্রি করবে চাষীরা-ইজারার আওতায় সেই লিচুর আড়ত

শরিফুল ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: অবশেষে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে  ইজারার আওতায় আনা হলো নাটোরের গুরুদাসপুরের নাজিরপুর এলাকার বেড়গঙ্গারামপুর লিচুর আড়ত। এতে করে পূর্বের শতকরা ৮টা কমিশনের জায়গায় কোন ধরনের খাজনাই দিতে হবে না কৃষকদের। অপরদিকে ক্রেতাদের শতকরা ৪টা কমিশনের স্থলে ক্যারেটপ্রতি দিতে হবে মাত্র ৫ টা ও বড় ঝুড়ি ২০ টাকা ও ছোট ঝুড়ি ১০ টাকা হারে। শতকরা হিসাবে যা ১ টাকারও কম। এছাড়া সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হবে ৯ লাখ টাকা। আড়তটি ইজারার আওতায় আসায় সিন্ডিকেট ভেঙ্গে চাষীরা এখন বাড়তি লাভের মুখ দেখতে পেরে পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

রবিবার দুপুরে গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুরে নিরাপদ লিচু উৎপাদন, আহরন এবং বিক্রয় নিয়ে ব্যবসায়ী, লিচু বাগান মালিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় চাষী ও ব্যবসায়ীদের বক্তব্যে উঠে আসে আড়তদাড়ির নামে সিন্ডিকেট করে কমিশন বাণিজ্যের বিষয়টি। তারা জানান, আড়তদাড়ির নামে চাষীদের কাছ থেকে শতকরা ৮টাকা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৪ টা হারে কমিশন নেয়া হতো এছাড়া মসজিদসহ সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নামে ঝুড়ি প্রতি নেয়া হতো ৫ টাকা করে। বিষয়টি জেনে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে কমিশন বাণিজ্যে বন্ধের নির্দেশ দেন।

এরপরই আলোচনায় উঠে আসে কমিশনের নামে এমন চাঁদাবাজীর কথা। তবে আড়তদারদের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এর পুরো টাকা তাদের পকেটে যায় না এর কমিশন যায় রাজনৈতিক নেতাসহ অনেকের পকেটে।

এলাকাবাসী জানান, লিচুর রাজধানী হিসেবে পরিচিত নাটোরের গুরুদাসপুরে উৎপাদিত লিচু নিয়ে গত ২০বছর ধরে বেড়গঙ্গারামপুর লিচুর আড়ত পরিচালনা হয়ে আসছে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানার জায়গা ওপর আড়ত প্রতিষ্ঠিত এমন ধুয়া তুলার কারনে এতো দিন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিতে পারেনি। এই সুযোগে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত মালিক সমিতি কমিশন বাণিজ্য করে কৃষকের লাখ লাখ টাকা পকেটে ঢুকাচ্ছিল।

এদিকে রবিবারে এসপি লিটন কুমার সাহার হুশিয়ারীর  পর জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারস্থ হয় আড়ত মালিকরা। তবে প্রশাসন অনড় থাকায় হালে পানি পাননি আড়ত মালিকরা।

অবশেষে উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ইজারার আওতায় আনা হলো লিচু আড়ত। বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত এলাকায় অনুসন্ধান করে খাস জায়গা বের করে হাট বাজার ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী সোমবার দুপুরে উন্মুক্ত ইজারা ঘোষণা করেন গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার আবু রাসেল।

মোট ৯লাখ টাকায় ইজারা মূল্যে আড়তটি নিয়েছেন স্থানীয় এক আড়ত মালিক। এতে লিচু বাগান মালিকদের আর কোন কমিশনের টাকা দিতে হবে না। তবে যারা লিচু ক্রয় করবেন তাদেরকে প্লাস্টিকের ক্যারেট প্রতি ৫টাকা, বড় ঝুঁড়ি ২০টাকা এবং ছোট ঝুঁড়ি প্রতি ১০টাকা ইজারা দিতে হবে।

এসময় আগামী দুই মাসের জন্য ৭লাখ ৬০টাকায় লীজ গ্রহন করেন স্থানীয় মাহাবুব হোসেন নামের এক আড়ত মালিক। এছাড়া ২০শতাংশ ভ্যাট ধরে মোট ৯লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। এতে করে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছে লিচু বাগান মালিকরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার আবু রাসেল।

2 responses to “কমিশন ছাড়া লিচু বিক্রি করবে চাষীরা-ইজারার আওতায় সেই লিচুর আড়ত”

  1. … [Trackback]

    […] Information on that Topic: doinikdak.com/news/16158 […]

  2. … [Trackback]

    […] Find More to that Topic: doinikdak.com/news/16158 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x