ঢাকা, রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন
গুরুদাসপুরে খাদ্য গুদামে অনিয়ম কৃষকদের মানববন্ধন
Reporter Name

শরিফুল ইসলাম, গুরুদাসপুর(নাটোর)প্রতিনিধি: অবৈধ কমিশন বাণিজ্যবন্ধ ও দালালমুক্ত উপজেলা খাদ্যগুদামের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার সাধারন কৃষক ও চালকল মালিক সমিতি। রোববার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে ওই সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়েছে।
কর্মসুচি থেকে অভিযোগ করা হয়, খাদ্যগুদামে ধান বা চাল দিতে গেলেই চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকদের থেকে শুরু করে সাধারন কৃষকদের পর্যন্ত বস্তা প্রতি ৬০ টাকা (কেজি প্রতি ১.২০ টাকা) করে  অবৈধ কমিশন গুনতে হয়।  চালকল মালিক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. সামছুল হক শেখ ও  আব্দুর রহিম মোল্লার মাধ্যমে ওই কমিশনের টাকা পরিশোধ করতে হয়। কমিশনের টাকা পরিশোধ করে ‘বিশেষ টোকেন’ সংগ্রহ করতে হতো। সেই টোকেন দেখিয়ে খাদ্যগুদামে ঢুকানো হতো ধান বা চাল। এতে আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন সাধারন মিলার ও কৃষক।

উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি ইসমাইল হোসেন মাষ্টার ওই কর্মসুচিতে সভাপতিত্ব করেন। সমস্যা তুলে ধরে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, চাল ব্যবসায়ী বছের উদ্দিন প্রামানিক।ব্যবসায়ীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা এবং পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম প্রমূখ।

ব্যবসায়ী বছের প্রমানিক বলেন, ‘সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. সামছুল হক শেখ ও  কৃষক সদস্য আব্দুর রহিম মোল্লা সর্বশেষ কমিটিতে স্থান না পেয়ে  উপজেলা চাল সংগ্রহ কমিটির যোগ সাজশে শনিবার ছুটির দিনে গোপনে বোরো সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী দিনেই প্রায় ৫০ মে.টন চাল ক্রয় করেন খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ। মূলতঃ কমিশন বানেিজ্যর হাত থেকে বাঁচতেই তাদের এ কর্মসূচী।উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, ‘এবারও ওই চক্রটি কমিশন বানিজ্য করতে  চালকল মালিক সমিতিকে অবগত না করেই গোপনে ছুটির দিনে শনিবার বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন। গত সংগ্রহ অভিযানে ২ হাজার ৭৪৬ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করতে গিয়ে কেজিতে ১টাকা ২০ পয়সা হিসাবে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা কমিশন বানিজ্য করেন ওই চক্র। এবারও একই ভাবে কমিশন বানিজ্য করতে চালকল মালিক সমিতিকে না জানিয়েই সংগ্রহ কমিটির যোগসাজশে চাল সংগ্রহ শুরু করেছেন। আরো বলেন, ওই চক্রকে রুখতে তাদের ওই কর্মসূচী।

চালকল মালিক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক সামছুল হক শেখ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোন কমিশন বানিজ্য করা হয়নি। কোন সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত নেই।খাদ্য পরিদর্শক বিদ্যুৎ কুমার দাশ বলেন, এবারে প্রতি কেজি ধান ২৭ টাকা হারে ৪৮১ মেট্রিকটন ধান ও ৪০ টাকা কেজি হারে ৩ হাজার ৩৮৪ মেট্রিকটন চাল ক্রয় করা হবে। তবে কোন অনিয়ম তারা করছেন না বলে জানান তিনি।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক উম্মে কুলসুম বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করেই ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের সভাপতি ও ইউএনও মো. তমাল হোসেন বলেন, মিলারদের অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

x