রাসেল আহমেদ সাজিদ, নাটোর প্রতিনিধিঃ আসছে মধু মাস জ্যৈষ্ঠ। এরই মধ্যে রং বদলাতে শুরু করেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ৫৭০টি লিচু বাগান। আর মাত্র ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই এসব বাগানের পরিপূর্ণ রসালো লিচু বাজারজাতকরণের উপযোগি হয়ে উঠবে। কিন্তু প্রতিবছর দেশের আভ্যন্তরীণ জেলা থেকে মহাজন, ব্যাপারী ও ফড়িয়ারা লিচুর বাগান দেখতে আসলেও করোনা মহামারির কারণে তারা আসতে পারছেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লিচুর ফলনও কম হয়েছে। যার ফলে লিচুর বাজারজাতকরণ ও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন লিচু চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
সোমবার উপজেলার বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে জানা গেছে, ক’দিন আগেও উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে স্বর্ণালি মুকুল শোভা ছড়াচ্ছিল। এখন তা দানা বেঁধে সবুজ গুটি থেকে হলুদ রং ধারণ করতে শুরু করেছে। বাগান মালিকদের নিরলস পরিশ্রমে লিচু পর্যায়ক্রমে পরিপূর্ণ আকার ধারণ করছে। মধুমাসের ফল হিসেবে পরিচিত এখানকার মোজাফ্ফর ও বোম্বাই জাতের লিচু দেশ সেরা। এছাড়া চায়না থ্রি জাতের স্বল্প সংখ্যক লিচু বাগান রয়েছে। উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর ও মাহমুদপুর এলাকা থেকে প্রতিবছর এসব লিচু ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু অনাবৃষ্টি ও অতি খরার কারণে লিচু রোদের তাপে পুড়ে ঝরে পড়ছে। এ কারণে এ বছর লিচুর সরবরাহ কম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। লোকসানের সম্মুখীন হতে চলেছে লিচুর বাগান মালিকরা।
বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ৎদার মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রতিবছর লিচুর ভরা মৌসুমে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২০ ট্রাক করে লিচু দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এ বছর প্রখর রোদে পুড়ে লিচু ঝরে পড়ায় সরবরাহ অনেক কম হবে। আগে প্রতি ট্রাকে গড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার লিচু থাকতো। এবার ট্রাকপ্রতি সর্বোচ্চ দেড়লাখ টাকার লিচু থাকতে পারে। সেই হিসেবে তিন সপ্তাহের এই মৌসুমী লিচুর বাজার থেকে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার লিচু বেচাবিক্রি হবে। নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও লাভবান হওয়ার আশায় বুক বেঁধে লিচুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লিচু চাষীরা।
বেড়গঙ্গারামপুরের লিচু চাষী সেলিম মোল্লা বলেন, আমার বাগানে ৭০টি লিচু গাছ আছে। লিচু ঝরে পড়া রোধে পানির সেচ দিচ্ছি। কাটবিড়ালী ও বাদুড় তাড়াতে লিচুর গাছে জাল টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি লিচুর আকার ছোট হয়েছে। তাছাড়া শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে গত মৌসুমের তুলানায় লিচুর ফলন অনেক কম হয়েছে। একই কারণে লিচুর আকার ও স্বাদের পরিবর্তন হয়েছে। লিচু পাকা ও হলুদ রং ধারনের আগেই ফেটে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে লিচুর অবস্থা ভালো আছে মন্তব্য করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ জানান, এ বছর ৫৭০টি ছোটবড় বাগান মিলে লিচু চাষীরা ৪১০ হেক্টোর জমিতে লিচু উৎপাদন করছেন। বর্তমানে লিচুর অবস্থা ভালো আছে। কিছুকিছু জায়গায় খরার কারণে সমস্যা হয়েছে। আমরা কৃষকদেরকে সেচ এবং পানি ছিটিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি কৃষকরা লিচুর ভাল ফলন পাবেন এবং ভাল বাজারমূল্যও পাবেন।
… [Trackback]
[…] Info to that Topic: doinikdak.com/news/12691 […]
… [Trackback]
[…] Read More here on that Topic: doinikdak.com/news/12691 […]
… [Trackback]
[…] Find More on on that Topic: doinikdak.com/news/12691 […]
… [Trackback]
[…] Find More on that Topic: doinikdak.com/news/12691 […]
… [Trackback]
[…] Read More Info here to that Topic: doinikdak.com/news/12691 […]
… [Trackback]
[…] Here you can find 13760 additional Information on that Topic: doinikdak.com/news/12691 […]