কানাডার ধর্মীয় উপাসনালয়ে নেই আগের মতো কোলাহল। অজানা অদৃশ্য শত্রু করোনা শুধু মানুষের জীবন নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি সারাবিশ্বকে করেছে স্থবির। ধর্মীয়় উপাসনালয়়গুলোতে সীমিত পরিসরে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও অধিকাংশ কার্যক্রম হচ্ছে ভার্চুয়ালি। পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যেভাবে মসজিদে এবাদত বন্দেগিতে মগ্ন থাকতো গত দু’বছর তা আর পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
কানাডার মসজিদগুলোতে একসাথে বসে ইফতার আর তারাবীহ নামাজ আদায় হলেও তা সীমিত পরিসরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই পালন হচ্ছে।
কানাডার বিভিন্ন বৃহত্তম মসজিদের মধ্যে ক্যালগেরির “আকরাম জুম্মা ইসলামিক সেন্টার” আলবার্টা প্রদেশের একটি অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ। কোভিড পূর্ব সময়ে প্রায় ৪ হাজার মুসল্লী একসাথে জুম্মার নামাজ আদায় করতো মসজিদটিতে। কিন্তু কোভিড-১৯ এর বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে দূরত্ব বজায় রেখে জুমার নামাজ আদায় হচ্ছে।
বরফাচ্ছন্ন কানাডার প্রায় ৮ মাসই বরফে আচ্ছাদিত থাকে। এ বছর রমজান মাসের শুরুতেও এর পরিবর্তন ঘটেনি। প্রচণ্ড বৈরি আবহাওয়াও ম্লান করতে পারেনি প্রবাসী বাঙালিদের মসজিদে আগমন। কিন্তু গত দু’বছর কোভিড-১৯ এর কারণে গৃহবন্দি আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে মসজিদের রূপ ভিন্ন আকার ধারণ করেছে। দূরত্ব বজায় রাখা আর সরকারের দেয়া বিধিনিষেধ মানতে যেয়ে অনেকটাই স্থবির বিভিন্ন কার্যক্রম। প্রবাসী মুসলিম বাঙালিরা কানাডায় থাকলেও ভুলে যায়নি তাদের ধর্মীয় রীতি নীতির কথা। বিগত বছরগুলোতে তার প্রতিফলন ঘটতো তারাবির নামাজের সময় যখন ছোট ছোট শিশু কিশোররা অভিভাবকদের সাথে মসজিদে আসতো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে এখন তা আর হচ্ছে না।
ক্যালগেরিতে অন্যান্য মসজিদের পাশাপাশি বাঙালিদেরও রয়েছে নিজস্ব একটি মসজিদ। প্রবাসী বাঙালিদের দ্বারা নির্মিত মসজিদটির নাম বাইতুল মোকাররম ইসলামিক সেন্টার অফ ক্যালগেরি (বিএমআইসিসি )। এখানেও নারী পুরুষের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আদায় হয় নামাজ।
বিগত বছরগুলোতে প্রবাস জীবনের যান্ত্রিকতাময় দিনগুলোতে ইফতার আর তারাবি নামাজ শেষে এই সময়টাতে প্রবাসী বাঙালিরা মিলিত হতো একে অপরের সাথে। পুরো পরিবেশ পরিণত হতো এক ভিন্ন আমেজে। কিন্তু গত দু’বছর এর চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। এশিয়ান এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে সবাই মিলে যখন মসজিদটিতে মিলিত হতো তখন মনে হতো যেন একখণ্ড বাংলাদেশ।
ক্যালগেরি আকরাম জুম্মা ইসলামিক সেন্টার এর ইমাম জামাল হামমৌদ জানালেন, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সরকারের বিধিনিষেধ মেনে চলার কারণে অনেকে মসজিদে আসতে পারছে না, তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাও আমাদের কাছে এখন জরুরি, ঘরে বসে এবাদত করলেও মহান রাব্বুল আলামীন নিশ্চয়ই আমাদের এবাদত কবুল করবেন। তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক মহামারীর করোনা মুক্ত হয়ে সারা বিশ্বে সবকিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে আল্লাহর কাছে এটাই প্রার্থনা।
সিয়াম সাধনার এই মাসে সংযম আর আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে যাবতীয় ভোগ বিলাস, অন্যায়, অপরাধ, হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত পরিহার করে ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনে বয়ে নিয়ে আসবে শান্তির বার্তা ক্যালগেরিতে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের এমনটাই প্রত্যাশা।
কানাডায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অন্টারিও, কুইবেক এবং আলবার্টায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুব দ্রুত ছড়িয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে।
নিউজ সোর্সঃ কানাডার ধর্মীয় উপাসনালয়ে নেই আগের মতো কোলাহল
… [Trackback]
[…] Read More here on that Topic: doinikdak.com/news/8831 […]
… [Trackback]
[…] Read More Information here on that Topic: doinikdak.com/news/8831 […]
… [Trackback]
[…] Find More Info here on that Topic: doinikdak.com/news/8831 […]