ঢাকা, মঙ্গলবার ১১ মার্চ ২০২৫, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন
কুড়িগ্রামে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল
Reporter Name

হীমেল মিত্র অপু, স্টাফ রিপোর্টার: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় দুই মাস আগে মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে করা নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমডি লাভলু মিয়া মিলন নামের প্রোফাইলে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করার এক মিনিট ৩২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করা হয়।

পরে রাত ১১টার দিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেনসহ মোবাইল কোর্ট ঘটনাস্থলে যায়। তারা তৃতীয় জামায়াতের লাল মিয়া নামের ওই শিক্ষার্থী এবং তার পিতা মোতালেব হোসেনের জবানবন্দি নেন। এ সময় অভিযুক্ত বাংলা বিষয়ের শিক্ষক আবু সাঈদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক এবং এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন তারা।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে ওসি মো. আলমগীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে শিক্ষার্থী লাল মিয়া বলেছে- দুই মাস আগে তাকে শিক্ষক মো. আবু সাঈদ মারপিট করেছে। বিষয়টি ভয়ে কাউকে জানায়নি।

পিতা মোতালেব হোসেনসহ শিক্ষক এবং এলাকাবাসী জানান, তারাও ঘটনাটি জানতেন না। ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিও দেখে তারা মারপিটের ঘটনা জানতে পেরেছেন।

ওসি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে শিক্ষার্থী লাল মিয়ার শরীরে মারপিটের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এখন শিক্ষক মো. আবু সাঈদকে খোঁজা হচ্ছে। তাকে পাওয়া গেলে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করার বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এছাড়াও ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিওটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এরপর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এজন্য ঘটনাটির থানায় রেকর্ড হিসেবে রাখা রয়েছে।

আপলোড হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, মাদ্রাসার ঘরের ভেতরটা অন্ধকার। দিনে না রাতে ক্লাশ চলছে স্পষ্ট নয়। ক্লাসে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক একহাতে একটি বই ও অন্য হাতে একটি লাঠি (বেত) নিয়ে বসে আছেন। কিছুক্ষণ পর গোলাপি পাঞ্জাবি পরিহিত একজন শিক্ষার্থীকে একটি আঘাত করেন। পরে সাদা পাঞ্জাবি পড়া একজন শিশু শিক্ষার্থীকে মাথা নিচু করে মাটিতে লাগিয়ে পেছনে সজোরে কয়েকটি আঘাত করেন। পরে ওই শিক্ষার্থীর হাত ধরে বেধড়ক পেটাতে থাকেন আবার কখনও মাটিতে আছড়াতে থাকেন। এতে ওই শিক্ষার্থী চিৎকার করতে থাকে।

শিক্ষার্থী লাল মিয়ার পিতা এবং মাদ্রাসা সংলগ্ন মুদি দোকানদার মোতালেব মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, বলে দেওয়া হোম ওয়ার্কের বদলে অন্য লেখা দেওয়ায় ওই শিক্ষক পিটিয়েছে বলে তার ছেলে লাল মিয়া তাকে জানিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার প্রধান মৌলভী মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক স্থানীয় এবং পাথরডুবি বাজারের হাবিবুর রহমানের পুত্র। দেড় বছর এখানে শিক্ষকতা করেছেন।

তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করার ঘটনা নিয়ে সোমবার বাদ আছর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের মিটিং হয়েছে। মিটিংয়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীর বাবা মোতালেব মিয়ার বড়ভাই উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক মো. আবু সাঈদকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

x