ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
ঝিনাইদহ জেলা থেকে মেডিকেল পরীক্ষায় প্রথম হলেন নিঝুম
Reporter Name

হাবিবুর রাহমান ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: কলেজ সময় হতেই নিঝুমের স্বপ্ন ছিলো, বড় হয়ে ডাক্তার হবে । সাদা অ্যাপ্রোন থাকবে গায়ে । সেই স্বপ্ন আজ নিঝুমের পূরণ হয়েছে । ঢাকা মেডিকেল কলেজ,ঢাকায় চান্স পেয়েসেই সুযোগ অর্জন করেছে সেরা ২৫ জনের মধ্যে থেকে ।

সারা বাংলাদেশে ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জনের ভেতরে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সে অর্জন করেন ২৩ তম স্থান। জেলা পরিসংখ্যানে তিনিই প্রথম । ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার ২নং মির্জাপুরই উনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম ও রিনা বেগমের মেয়ে লায়লা জাহিদ নিঝুম এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ব্যবসায়ী পিতার এক মেয়ে ও এক ছেলে। অত্যন্ত মেধাবী নিঝুম ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখা করতে ভালোবাসে।

মেধাবী এইছাত্রী এলাকার মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন-এ প্লাস ও ট্যালেন্টফুলেবৃত্তি পেয়ে পিএসসিতে সফলতার সহিত উত্তীর্ণ হয়। এরপর বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে থেকেজেএসসি ও এসএসসি উভয় পরীক্ষায় গোল্ডেন-এ প্লাস ও সেখানেও ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পায়।

স্কুলের সকল প্রতিযোগিতা, অনুষ্ঠান, সবকিছুতেইছিল তার অংশগ্রহণ। স্কুলের সবাই একনামে চিনে তাকে। স্যার-ম্যামদের প্রিয় লায়লা জাহিদ নিঝুম,জুনিয়রদের আদরের নিঝুম আপু।তারপর সে ভর্তি হয় সরকারি কেসি কলেজ, ঝিনাইদহে । স্কুল-কলেজের দূরের ছাত্রী ছিল সে। আধাঘন্টা
গাড়িতে চড়ে শহরে আসতে হতো তাকে প্রতিদিন ।নিঝুমের ভাষ্যমতে, স্যার-ম্যাম আর বান্ধবীদের আদর ভালোবাসায় কোনো কষ্টই মনে হতো না তার । নিঝুমের প্রিয় বিষয় ছিল রসায়ন। স্যাররা রসায়নে তার ফলাফল দেখে অবাক হয়ে যেতেন । সে মাধ্যমিক স্কুল জীবনে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সহ আরও কত কিছুই হওয়ার স্বপ্ন দেখত । তবে সাদা মেডিক্যাল ড্রেসের মায়া উপেক্ষা করতে পারেনি সে।

অত্র কলেজ থেকে মোটামুটি শিক্ষার্থী মেডিকেল চান্স পায়, বছরে ১০-১৫জন। এখন ঢাকার কোনো মেডিকেলে কেউ আছেন তেমন জানা নেই। তবে শুনেছিলো,বছর পাঁচ আগে তাদের কলেজের একজন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। তারও নাম ছিলো নিঝুম । কলেজ জীবনটা ছিল তার কাছে স্বপ্নের মতো। কলেজের প্রতিটি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া, বিভিন্ন অলিম্পিয়াড, কম্পিটিশনে প্রথম হওয়া, বিশেষ করে সাইন্স অলিম্পিয়াড জাতীয় পর্যায়ে লড়াই করা ও বিভিন্ন বিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণকরাসহ সবকিছু মিলিয়ে জীবনটা অনেক সুন্দর ছিলতার। কলেজের সবাই একনামে চিনত লায়লা জাহিদ নিঝুম ।

অধ্যক্ষ স্যার থেকে শুরু করে সব শিক্ষক এবং তার বান্ধবীরা অনেক অনেক বেশি আদর করতেন তাকে। সব সময় মোটিভেট করতেন। নিঝুম কোনোদিন মন খারাপ করে থাকলে স্যার-
ম্যামরা জিজ্ঞাসা করতেন- কী হয়েছে নিঝুম মন খারাপ কেন? তুমি কি অসুস্থ? এ জিনিসগুলো যে কত বড় পাওয়া! পিতা-মাতার একমাত্র আদরের মেয়ে নিঝুম । তারা কখনো পড়ালেখা করতে চাপাচাপি করেননি। তার আম্মু আব্বু এমনও বলতেন এত পড়তে হবে না। মেডিকেলে না হলে আরও অনেক ভার্সিটি আছে। কোনো চাপ নেয়ার দরকার নেই।

রেজাল্টের আগের দিন রাতেও বুঝিয়ে বলেছেন অন্য কোথাও পড়াবেন সমস্যা নেই। সব সময় সাপোর্ট করতেন তাকে ; যা চাইতো উনাদের কাছে তার চেয়েও বেশি দিতেন। নিঝুম বলেছেন, আমি মনে করি কলেজ জীবনেই ভর্তি পরীক্ষার রুট গড়ে নেওয়া উচিত। আর এতে আমার সম্মানিত স্যাররা, আম্মু-আব্বু বিশেষ করে আমার কোচিং এর শিক্ষকরা আমাকে সর্বোচ্চ সাহায্য করেছেন। উনাদের দোয়া ও মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আমি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। নিঝুম সবার কাছে দোয়া চেয়ে জানান, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় সে যেন একজন ভালো ডাক্তার হয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকে সবার সেবা ও পেশাদারি দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

x