গণটিকার কর্মসূচিও সরকার দলীয়করণ করেছে অভিযোগ করে ‘সর্বজনীন’টিকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।
শনিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি মনে করে, সরকার পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহ না করেই গণটিকার নামে গণপ্রতারণা শুরু করেছে। চরম অব্যবস্থাপনা এবং দলীয়করণের কারণে এই লোক দেখানো গণটিকা অভিযান গণ-সংক্রমণ অভিযানে পরিণত হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির সভায় সরকারকে সব ধরনের দলীয়করণের প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে এসে সর্বজনীন টিকা দেওয়ার কার্য্করী ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছে। গণটিকা দেওয়ার কর্মসূচিকে সম্পূর্ণ দলীয় কর্মসূচিতে পরিণত করবার উদ্দেশ্যে দলীয় কর্মীদের সম্পৃক্ত করার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গতকাল সারাদেশে সরকার গণটিকার নামে গণতামাশা শুরু করেছে। তাদের (সরকার) হাতে টিকা এসেছে ১ কোটি ৬০ লাখ। অথচ শতকরা ৭০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে হলে প্রয়োজন হবে ২৬ কোটি টিকা।
প্রথম এক সপ্তাহে ১ কোটি টিকা দেওয়ার কথা বলে একদিনে ৩০ লাখ তিন দিনে দেওয়ার কথা বলেছে। সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপেই প্রমাণিত হয়েছে. টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।
টিকা প্রদানে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জনগণের সামনে উপস্থাপনেরও দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো এই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন মহাসচিব। পরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহযোগিতায় ঔষধ,মাস্ক,স্যানিটাইজার ও অক্সিজেন সিলিন্ডারসমূহ বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় সারা দেশের জেলা ও মহানগরের বিএনপির দলীয় কার্যালয়গুলো ঘোষনা দিয়ে করোনা হেল্প সেন্টার হিসেবে কাজ করছে। এসব সেন্টার থেকে করোনা সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ,বিনামূল্যে ওষুধ,মাস্ক,স্যানিটাইজার,অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব কাজকে গতিশীল করার লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহযোগিতায় ওষুধ,মাস্ক, স্যানিটাইজার ও অক্সিজেন সিলিন্ডার হস্তান্তর করা হয়।
করোনা টিকার বিষয়ে সরকারের মন্ত্রী ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দেওয়া ও পরে প্রত্যাহারের বিষয়গুলো তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এসবের মধ্য দিয়ে সরকারের সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্বহীতার পরিচয় জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়েছে।
করোনাকালে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাওয়া, দারিদ্র্যের সংখ্যা বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উধর্বগতিতে স্থায়ী কমিটির সভার উদ্বেগ প্রকাশের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিএনপির সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ সেলিম, জহিরুল ইসলাম শাকিল, মেহেদী হাসান, ফখরুজ্জামান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, শামীমুর রহমান শামীম, মাহবুব আলম, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply