ঢাকা, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন
দুই বছর ধরে দুপুরে ভাত খাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
স্টাফ রিপোর্টার

দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। নিজেরা তিনবেলা পেটভরে খাবারের পাশাপাশি প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গারও খাবারের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ। অথচ দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা ২ বছর দুপুরে ভাত খাননি! ১৯৯৬-৯৮ সালের এ ঘটনাটি সম্প্রতি জানা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে। তথ্যটি নেটিজেনদের সঙ্গে ফেইসবুকে শেয়ার করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।

ইতিহাসের নানা তথ্য তিনি তার ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে শেয়ার করে থাকেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ফেইসবুকে শেয়ার করা স্ট্যাটাসে দেখা যায়, তিনি লিখেছেন, ‘কখনও উচ্ছল, শান্ত, কখনও দুরন্ত। কখনও ভীষণ একরোখা, প্রচণ্ড জেদী। ভাঙবেন কিন্তু মচকাবেন না। এমন স্বভাবের মানুষটিকে দুই বছর কেউ দুপুরে ভাত খাওয়াতে পারেনি। কারও অনুরোধই শোনেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কথা বলছি। ১৯৯৬ সালে যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন, ক্ষমতায় এসেই শেখ হাসিনা প্রথম দরবার হলে গিয়ে জানতে চান, সেনাবাহিনীর কী কী সমস্যা আছে।

সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে জানান, তারা দুপুরে ভাত খেতে চান। তখন তারা দুপুরে শুধু রুটি খেতেন। কথাটা বঙ্গবন্ধুকন্যাকে খুবই মর্মাহত করে। শেখ হাসিনার সরকার সদ্য ক্ষমতায়। দেশে তখন খাদ্য ঘাটতি। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না করে, সেনাবাহিনীর জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত তিনিও দুপুরে ভাত খাবেন না। সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে সেদিন থেকেই দুপুরে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

দেশ, দেশের মানুষের কল্যাণ স্বার্থে ভীষণ একরোখা, প্রচণ্ড জেদী তিনি। ৯৬ থেকে ৯৮ দুই বছর নেতাকর্মী, শুভাকাক্সক্ষী, আত্মীয়স্বজন কেউ তাকে দুপুরে ভাত খাওয়াতে পারেনি। ১৯৯৮ সালে তার সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। সেনা সদস্যদের জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়। তিনি প্রতিজ্ঞা রাখলেন। অতঃপর সেনানিবাসে এসে সেদিন তাদের সঙ্গে বসে দুপুরে ভাত খান। এরপর থেকে আবার দুপুরে ভাত খাওয়া শুরু করলেন সূর্যদীপ্ত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। সত্যিই তার তুলনা শুধু তিনিই।

শেখ হাসিনাকে বুঝতে হলে শেখ হাসিনাকে জানতে হবে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও কবি জাফর ওয়াজেদ জানান, ২ বছর আগের এইদিনে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেইসবুকে এ বিষয়ে পোস্ট করেন। গতকাল মঙ্গলবার ফেইসবুকের মেমোরিতে বিষয়টি উঠে আসলে তিনি তা পুনরায় শেয়ার করেন।

এতদিন পর হঠাৎ এমন স্ট্যাটাস শেয়ার দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, শোকাবহ এই আগস্ট মাসেই কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা। বর্তমানে সেই সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে সহমর্মিতা এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা প্রশংসনীয়।

সেই শোকাবহ আগস্ট মাসকে পুনরায় স্মরণের জন্যই আমার এই স্ট্যাটাস। তিনি বলেন, এছাড়া বর্তমান এই করোনার সময়ে অনেক মানুষ অসহায় দিনযাপন করছেন তাদের জন্যও আমার এই স্ট্যাটাসটি শিক্ষণীয়। কারণ প্রধানমন্ত্রী নিজেই দুই বছর দুপুরে ভাত খাননি। এখান থেকেও অনেকে শিক্ষা নিতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x