দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ফেনী জেনারেল হাসপাতালে স্থাপিত অক্সিজেন প্ল্যান্টে পরীক্ষামূলকভাবে লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছে। বুধবার রাত ৯টার দিকে স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনাল অক্সিজেন লিমিটেডের একটি ট্যাংকার থেকে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে স্থাপিত প্লান্ট অক্সিজেন পূর্ণ করা হয়। এ প্রক্রিয়া সফল হলে রবিবারের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের অক্সিজেন সংকট ঘুচবে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, করোনার নতুন হটস্পট ফেনীতে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা। করোনা ইউনিটে নতুন ৩৪ জন ভর্তিসহ ১১৩ রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে আরটিপিসিআর পজেটিভ রয়েছেন ৩৮ জন। আইসিইউতে ১০ ও সিসিইউতে ৫ জন চিকিৎসাধীন। ভর্তি থাকা সব রোগীকে অক্সিজেন সেবা দেয়া হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সেবা দিতে ৬ হাজার লিটারের ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। এরপর ২৫০ শয্যার পুরো হাসপাতাল অক্সিজেন সেবার আওতায় আনতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন তৈরি করা হয়।
সূত্র আরো জানায় , ফেনী জেনারেল হাসপাতালে মাসখানেক ধরে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গে ভর্তি রোগীর চাপ সামলাতে ডাক্তার-নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। চলতি মাসের গত ২৭ দিনে করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে ৭৯ জন মারা যান। আইসিইউতে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতদিন সিলিন্ডার অক্সিজেন ব্যবহার করে রোগীদের সেবা দেয়া হয়। এখন প্রতিদিন ৪০০টি ছোট, ১৫০টি বড় সিলিন্ডার লাগছে।
হাসপাতালের আরএমও ডাঃ ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, ফেনীর এ হাসপাতালে দিন দিন করোনা ও উপসর্গে আক্রান্ত রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় ৬ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে ইউনিসেফ। এখন ইউনিসেফের লোকজন এটি পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকদিন চালু রাখবে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, প্রতিদিনই ফেনী জেনারেল হাসপাতালে করোনা ইউনিটে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এমতাবস্থায় সিলিন্ডার দিয়ে রোগীর অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। করোনা ইউনিটে ভর্তিকৃত প্রায় সব রোগীর জন্যই অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন হচ্ছে। বড় বিপর্যয়ের আগেই লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্টে রিফিল করে পরীক্ষামূলক ভাবে এটি চালু করতে পারায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন।
আইসিইউ ইউনিটের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আসিফ ইকবাল বলেন, বর্তমান সময়ে অনেক মুমূর্ষ রোগী হাসপাতালে আসছেন। তাদের অক্সিজেন বেশি লাগে। এসব সিলিন্ডার দিয়ে হয় না। সিলিন্ডার পরিবর্তন করার সময় রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে প্ল্যান্টটি দ্রুত চালু হলে রোগীরা নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ পাবে। এটি ফেনীবাসীর জন্য অনেক বড় সৌভাগ্য।
Leave a Reply