বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত) ১ হাজার ৮২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে করোনায় ও উপসর্গে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫০ জনের। এই সময়ে করোনায় ২ জন এবং উপসর্গে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২১ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত বিভাগের শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫০ থেকে ২৭৪–এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ঈদের ছুটির কারণে গত চার দিনে এই বিভাগে নমুনা সংগ্রহ কম হয়েছে। তাই শনাক্তের সংখ্যাও কম ছিল। কিন্তু শনাক্তের হার কম ছিল না।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৭৬৬ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ বরিশাল জেলায় ২৭৩ জন (এ নিয়ে মোট ১১ হাজার ৩০২ জন), পটুয়াখালীতে নতুন ১০৬ জন (এ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৫৫৯ জন), ভোলায় নতুন ১০২ জন (এ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৯৬৯ জন), পিরোজপুরে নতুন ৫৯ জন (এ পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৯৩০ জন), বরগুনায় নতুন ১১৯ জন (এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ২ হাজার ৫০৭ জন) এবং ঝালকাঠিতে নতুন ১০৭ জন (মোট ৩ হাজার ৬৪৪ জন)। এ নিয়ে গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বিভাগে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৮ হাজার ৯১১ জন।
২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন চারজন। তাঁদের দুজন পিরোজপুরের এবং বাকি দুজন বরিশাল ও ঝালকাঠিতে। এ নিয়ে বিভাগে করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন ৪২০ জন।
রোগী বাড়ছে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলায়
মে মাসের মাঝামাঝি এই বিভাগে দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালাকাঠি—এই তিন জেলায় সংক্রমণ বেশি থাকলেও বাকি তিন জেলায় তা অনেক কম ছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা—এই তিন জেলায়ও সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীতে ১০৬ রোগী শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ১১। বরগুনায় শনাক্ত হয় ১১৯ জন, এ জেলায় শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৬৭। ভোলায় শনাক্ত হয় ১০২ জন আর শনাক্ত হার ৪৭। এদিকে এই বিভাগে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি বরগুনায়। এই জেলায় মৃত্যুহার ২ দশমিক ১৫ শতাংশ। এরপর আছে পটুয়াখালী জেলা, ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বিভাগে এই হার ১ দশমিক ৪৫।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, বরিশাল বিভাগে জুলাইয়ের প্রথম থেকেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়ে তা ক্রমেই বাড়ছে। ঈদের ছুটি থাকায় চার দিন ধরে নমুনা সংগ্রহ কম হওয়ায়, পরীক্ষাও কম হয়েছে বলে শনাক্ত হয়েছে কম। তবে শনাক্ত ও মৃত্যুহার দুটোই বেশি ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে সংক্রমণের হার ৪০ অতিক্রম করেছে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। ঈদে প্রচুর লোকজন বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই গ্রামে আছেন। এ জন্য উদ্বেগটা এবার আরও বেশি। তাই সামনের এক সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ভয়াবহ। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে মানুষ সচেতন না হলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে।