ঢাকা, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন
নেত্রকোনায় করোনায় অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু, শনাক্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

নেত্রকোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় আট মাসের এক অন্তঃসত্ত্বাসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে জেলায় নতুন করে ১০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড। নেত্রকোনা সিভিল সার্জন কার্যালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নেত্রকোনা শহরের সাতপাই এলাকার ২৮ বছরের একজন অন্তঃসত্ত্বা রয়েছেন। এ ছাড়া আটপাড়া, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, কলমাকান্দা উপজেলায় একজন করে মারা গেছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ৬০ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় মোট ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক দিনে জেলায় ২৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৭৬। নতুন শনাক্ত ১০১ জন রোগীর মধ্যে ৫৪ পুরুষ ও ৪৭ নারী রয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া মোহনগঞ্জের ২০ জন; বারহাট্টার ৮; কেন্দুয়া, পূর্বধলা ও কলমাকান্দার ৪ জন করে; মদনের ২, আটপাড়ার ৭, দুর্গাপুরের ১১ ও খালিয়াজুরির ৫ জন রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় ২১ হাজার ২৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনায় শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৪৭৬। আর এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৩৪ জন সুস্থ হয়েছেন।

নেত্রকোনায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা, ভেন্টিলেটর, আইসিইউ শয্যাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। ফলে জেলার করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা পেতে একদিকে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, অন্যদিকে উন্নত চিকিৎসাসেবা না থাকায় চলমান পরিস্থিতিতে জেলাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রায় চার মাস ধরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ইউনিটে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহব্যবস্থার লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। তবে সেই কাজও ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কয়েক মাস আগে এই হাসপাতালে দুটি ভেন্টিলেটর সরবরাহ হলেও এখনো সেগুলো বাক্সবন্দী রয়েছে।

হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা, আইসিইউসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জটিল রোগীদের ময়মনসিংহ ও ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। আবার জেলায় আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীই হাসপাতালে না এসে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালটির ৩৬ শয্যার করোনা ওয়ার্ডে বর্তমানে ৭ জন রোগী ভর্তি আছেন। জেলায় বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৯৯৩। এর মধ্যে ৩০ জন জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ৩ জন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকি ৯৬০ জন বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এস এম মাহবুবুর রহমান জানান, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালুর কাজ শেষ হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর ইত্যাদি চালু করতেও কমপক্ষে পাঁচজন অবেদনবিদ ও তিনজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন, যা এখানে নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x