টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রামে অঞ্চলে।অতিরিক্ত রোগির চাপে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের বেড ছাড়াও গাদাগাদি করে মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। করোনা ওয়ার্ডের টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী ও রাতে মশার উৎপাত বেড়ে যায় বলে অভিযোগ করেছে রোগি ও স্বজনরা।
এছাড়াও হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক, ১০ জন ডাক্তার ও ৩৮ জন নার্স আক্রান্ত হওয়ায় ডাক্তারের সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত টাঙ্গাইলে ৬৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। আক্রান্তের হার ৩৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৫৭৫ জন। এছাড়াও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাত জন ও উপসর্গ নিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলা মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৬ জন। গত জুন মাস থেকে করোনা বাড়তে থাকে। ১২ জুন থেকে আক্রান্তের হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। মাঝে ২৫ ও ২৬ জুন আক্রান্তের হার ২৫ শতাংশের নিচে থাকলেও পরে তা আবার বেড়ে যায়।
জুলাই মাস থেকে আক্রান্তের হার ৪০ শতাংশের উপরে রয়েছে। ১ থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৬৭ জনের। গত বছর করোনা সংক্রমন শুরু হওয়ার পর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ট্রমা সেন্টার ভবনে ৫০ শয্যার একটি করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ড চালু করা হয়। এখন এই ওয়ার্ডটিতে করোনা সন্দেহভাজন রোগিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত রোগিদের জন্য জেনারেল হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডকে করোনা ডেডিকেটে ওয়ার্ড করা হয়েছে। সেখানে ৫৬ টি শয্যা রয়েছে। এছাড়াও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ১০টি শয্যা রয়েছে। ওয়ার্ডে উপচে পড়া ভীড়। জেলার গ্রাম অঞ্চলে ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি কাঁশির রোগি রয়েছে। করোনা পরীক্ষা করালেই অধিকাংশ রোগির পজিটিভ আসে। এজন্য গ্রামেগঞ্জে করোনার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বেশি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, করোনা ইউনিটে ৮১জন ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৫৩ জন ভর্তি রয়েছে। করোনা ওয়ার্ড ও সন্দেহ ওয়ার্ডের কোন সিট খালি নেই। অতিরিক্ত রোগিদের গাদাগাদি করে মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগির স্বজনদের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা দেখা গেছে। আবার অনেক রোগির বেডে স্বজনরা বসে আছে।
দেলদুয়ার উপজেলার মৌলভীপাড়া গ্রাম থেকে আসা রোগি স্বজন লিপি বেগম বলেন, আমার স্বামী মামুন মিয়া (৫০) করোনায় আক্রান্ত। বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করেছি। বেডের পাশের জানালার দরজা ভাঙা। রাতে মশার যন্ত্রণায় ঘুম পারতে পারিনি। টয়লেটও ব্যবহারের অনুপযোগী। একবার টয়লেটে গেলে বার বার বমি আসে। এছাড়াও উপরের ফ্যান ঘুড়ে না। বাহির থেকে হাত পাখা কিনে এনে বাতাশ দিচ্ছি। ফারুক হোসেন নামের অপর রোগি স্বজন বলেন, তিন দিন জ্বর থাকার পর আমার মাকে করোনা সন্দেহ ওয়ার্ডে ভর্তি করেছি। দুইদিন যাবত শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। কোন বেড না পেয়ে ফ্লোরেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ঔষধ ও খাবার বাহির থেকে কিনে আনতে হয়। হাসপাতাল থেকে তেমন কিছু দেয়া না।
সুমন মিয়া নামের এক রোগি বলেন, হাসপাতালের টয়লেট গুলো ব্যবহারের অনুপযোগি। বেশ কিছু ফ্যানও অচল। মশার উৎপাত বেড়ে গেছে। এসব সমস্যার কারণে আমার মতো অনেক রোগির দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. মো. সাদিকুর রহমান বলেন, আমাদের জনবলের সংকট রয়েছে। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দ্ররুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, টাঙ্গাইলে আরো ২০ জন চিকিৎসক এবং চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাওয়া হয়েছে। আইসিসিডিডিআর এর ল্যাবে পরীক্ষা করে টাঙ্গাইলের রোগিদের প্রায় শতভাগই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট আক্রান্ত।
… [Trackback]
[…] There you will find 59686 additional Information on that Topic: doinikdak.com/news/34296 […]
… [Trackback]
[…] Find More Information here on that Topic: doinikdak.com/news/34296 […]
… [Trackback]
[…] Find More to that Topic: doinikdak.com/news/34296 […]
… [Trackback]
[…] Find More to that Topic: doinikdak.com/news/34296 […]
… [Trackback]
[…] There you will find 79735 additional Information on that Topic: doinikdak.com/news/34296 […]
… [Trackback]
[…] Info on that Topic: doinikdak.com/news/34296 […]
… [Trackback]
[…] Read More Info here to that Topic: doinikdak.com/news/34296 […]