ঢাকা, মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
পাইকগাছায় করোনায় মৃত রনজিতের লাশের পাশে যায়নি স্বজনরা!
মোঃ মনিরুলইসলাম, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

নিয়তির কি নির্মম পরিহাস। করোনায় মৃত্যু হয়েছে তাই, মৃত্যুর আট ঘন্টা পরও স্বজনদের কেউ মৃতদেহের কাছে যায়নি। এমনকি ঘর থেকে লাশ বাইরে নেয়া থেকে শুরু করে সৎকার পর্যন্ত শেষ সময়ের সব কাজ করতে হয়েছে ভাড়া করা ডোম দিয়ে। করোনার কাছে মানবতাও যেন হার মেনেছে। হৃদয়স্পর্ষি ঘটনাটি পাইকগাছার মামুদকাটির জেলে পাড়ার। জানাগেছে, পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের মাহমুদকাটি গ্রামের মৃত সূযৃকান্ত বিশ্বাসের ছেলে রনজিত বিশ্বাস (৪০)।

কযেক দিন আগে তার করোনা উপসর্গ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষায় ১ জুলাই তার পজেটিভ শনাক্ত হয়। এরপর স্থানীয় জনৈক বাসুদেব ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে বাড়িতেই তার চিকিৎসা চলছিল। শনিবার (৩ জুলাই) তার অবস্থার অবনতি হলে খুলনায় নেয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্সসহ কোন বাহন না পাওয়ায় তার আর বাইরে নেয়া হয়ে ওঠেনি। এরপর রবিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

পারিবারিক সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, করোনায় মৃত্যু হওয়ায় লোকাল ডাক্তারের পরামর্শে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনদের কেউ তার পাশে যায়নি। একপর্যায়ে ঘর থেকে লাশ বাইরে নেয়া থেকে শুরু করে সৎকার পর্যন্ত পাইকগাছা থেকে জনৈক মোতিয়ারসহ ২ জন ডোম ও এলাকার ৩ সাহসী যুবক এগিয়ে এসে স্থানীয় শ্মশানে তার লাশের সৎকার করেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, মৃত রনজিত ৩ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। বড় ভাই গত হযেছেন আরো আগে। মৃত্যু কালে রনজিৎ স্ত্রী লক্ষ্মী রাণী (২৮) ও একমাত্র সন্তান পাখি (৭) সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তবে আগ্রাসী করোনায় তার মৃত্যু হওয়ায় সৎকারে আপনজনদের কেউ এগিয়ে আসেনি। লাশ বহনে স্বজনদের কাঁধে চড়ে নয়, শব যাত্রা হয় ডোমদের সাহায্যে ভ্যানে করে শ্মশান পর্যন্ত। এরপর চিতা সাজানো থেকে মুখাগ্নী পর্যন্ত সব কাজ সারেন তারাই। এ যেন করোনার কাছে মানবতার পরাজয়!

x