ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন
ঈশ্বরগঞ্জে ধর্ষণের অভিযোগ থাকায় ৩৮ দিন পর তরুণীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন
তাপস কর, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ধর্ষণের অভিযোগ থাকায়  ৩৮ দিন পর তরুণীর লাশ কবর থেকে উওোলন করা হয়। ধর্ষণের অভিযোগ থাকায় আদালতের নির্দেশে আজ সোমবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এক তরুণীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। গত ১২ মে রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে ১৩ মে দাফন করা হয়েছিল তাকে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এতে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়লে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মেয়েটির গর্ভপাত ঘটানো হয়। কিন্তু তাতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পর ১২ মে রাতে মারা যায় সে। মৃত্যুর পর মেয়ের বাড়ি থেকে দশ মাইল দূরে ইসলামপুর এলাকায় দাফন করা হয়।

পুলিশ জানায়, উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মো. স্বপনের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার (১৬)। স্বপনের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে উচাখিলা বাজারে পরিত্যক্ত সরকারি একটি ঘরে বসবাস করতেন আছমা। গত ১২ মে রাতে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্বর্ণা। হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয়েছিল- যক্ষার জীবাণু শরীরে ছড়িয়ে পড়া এবং এই জীবাণু ব্রেইনের রক্তনালীতে বাসা বাঁধার কারণে স্ট্রোকে মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ১৩ মে পরিবারের লোকজন স্বর্ণার মরদেহ দাফন করেন ইসলামপুর মাদ্রাসার গোরস্থানে।

কিন্তু ২৪ মে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নর্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা করেন তরুণীর বাবা স্বপন। এতে আসামি করা হয় উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, তার ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মঞ্জুরুল হক, তরুণীর মাসহ ৫ জনকে। গত ৩১ মে আদালতের নির্দেশে মামলাটি ঈশ্বরগঞ্জ থানায় নথিভুক্ত হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়- মায়ের সহায়তায় উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরুণীটিকে বিয়ের প্রলোভনে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে। এতে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়লে গর্ভপাত ঘটানো হয়। কিন্তু তাতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পর ১২ মে রাতে মারা যায় সে। মৃত্যুর পর উচাখিলা থেকে বেশ দূরে ইসলামপুর এলাকায় দাফন করা হয়।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ। মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে লাশ উত্তোলন করা হয়। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাশপিয়া তাসরিনের উপস্থিতিতে গোয়েন্দা পুলিশ স্বর্ণার লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, মৃতুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x